টাকার জন্য গয়না বিক্রি করছে ভারতীয়রা

সোনার গয়না বন্ধক রেখে গত বছর ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছিলেন পল ফার্নান্দেজ। কিন্তু এ বছর সেসব গয়না তাকে ছেড়েই দিতে হচ্ছে। ভারতের গোয়া উপকূলের ৫০ বছর বয়সি এই প্রৌঢ় এক প্রমোদতরিতে ওয়েটারের চাকরি করতেন।

মহামারির মধ্যে গত বছর তার চাকরি চলে যায়। এরপর আর চাকরি জোটাতে পারেননি। নিজে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করেও বিফল হয়েছেন। তিনি বলেন, সোনার গয়না বন্ধক রেখে যে টাকা পেয়েছি সে তো শেষ পর্যন্ত একটি দেনাই। গয়নাগুলো বিক্রি করে দিয়েছি। এখন আর সুদ গুনতে হবে না।

সোমবার (১২ জুলাই) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারিতে অভাবে পড়ে পল ফার্নান্দেজের মতো ভারতের কোটি নাগরিক তাদের শেষ সঞ্চয় সোনার গয়নাগুলো বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সোনার গয়না ভারতে কেবল সাজসজ্জার উপকরণ নয়, বিভিন্ন আয়ের মানুষের সঞ্চয়ের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। আর সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রামের মানুষই সেখানে সোনার গয়নার সবচেয়ে বড় ক্রেতা।

করোনা ভাইরাসের মহামারিতে ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতিই সবচেয়ে খারাপ দশায় পড়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাংক কম বলে অভাবের তাড়নায় গত বছর অনেকে গয়না বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর তারা তা বিক্রি করে দিচ্ছেন।

লন্ডনভিত্তিক ‘মেটালস ফোকাস লিমিটেড’-এর উপদেষ্টা চিরাগ শেঠের মতে, ভারতে যদি সংক্রমণে তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়, তাহলে বিক্রির চাপে ‘গিনি বা কাঁচা সোনার’ মোট সরবরাহ বেড়ে গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২১৫ টনে উঠতে পারে।