আ’লীগ থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি

অবশেষে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে আলোচিত ব্যবসায়ী নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে।

রোববার বেলা ১২টার কিছু পরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে এই অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব মেহের আফরোজ চুমকি স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন।

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সংগঠনের নীতি বহির্ভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগ-এর মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ হতে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের ভুঁইফোড় একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

ফেসবুকে ওই সংগঠনের সভাপতি হিসেবে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক পদে থাকা হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসায় গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজেকে আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবেও পরিচয় দেন।

জানা যায়, আলোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের সংগঠন খুলে সেখানে নিজেকে সভাপতি এবং মাহবুব মনিরকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছিলেন। পরে এই সংগঠনে জেলা-উপজেলা ও বিদেশ শাখায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টারও ছাপা হয়। ওই পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।

সংগঠনটির দাবি, গত দু’তিন বছর ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

এদিকে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ এর পোষ্টার প্রকাশের পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পুরনো দু’টি ছবিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

যার পরিপ্রেক্ষিতে এক ফেসবুক পোস্টে জবাবও দেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও অন্যান্যদের সাথে যে ছবিগুলো ভাইরাল হচ্ছে সেটা বিয়েতে এসেছিল তখন তোলা ছবি এবং এই ছবিগুলা আমি নিজেই ফেসবুকে দিয়েছিলাম।

তার দাবি, আমি একজন প্রকৃত ১০০% ব্যবসায়ী ও সরকারের একজন কমার্শিয়ালি ইমপোর্টেন্ট পার্সন; সেখান থেকে রাজনীতিতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর সৈনিক ছোটবেলা থেকেই। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমাদেরকে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে যেতে হয়। একটা ছবি মানুষের রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে না।

এর আগে একই কারণে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগও তাদের কমিটিতে উপদেষ্টা পদে থাকা হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।