আফগানিস্তানের প্রধান তিন শহর ঘেরাও করেছে তালেবান

আফগানিস্তানের প্রধান তিনটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া সশস্ত্র তালেবান গোষ্ঠি। দেশটির হেরাত, লস্কর গাহ এবং কান্দার শহর দখলে নিতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সশস্ত্র এ গোষ্ঠী। খবর বিবিসির

মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর ক্ষমতা দখলে বেপরোয়া তালেবান। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে চলছে তুমুল লড়াই। এরইমধ্যে দেশটির অধিকাংশ এলাকা দখলে নিলেও প্রধান শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে আফগান সরকার।

তবে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ আফগানিস্তানের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি বড় শহর হেরাত, লস্কক গা এবং কান্দারে এরইমধ্যে ঢুকে পড়েছে তালেবান সদস্যরা।

দু’পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে শহর ছেড়ে পালাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এরইমধ্যে লস্কর গা শহরের বেশিরভাগ এলাকা তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।

দুই পক্ষের তীব্র লড়াইয়ের কারণে শহর তিনটিতে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

দ্রুত সংঘাত বন্ধ করে এসব এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ করা জরুরি বলেও জানানো হয়।

এদিকে লস্কর গা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়েছে আফগান বিমান বাহিনী। এতে একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আফগান সামরিক বাহিনী।

তাদের দাবি, ওই হাসপাতালে আহত তালেবান সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। তবে হাসপাতালটির মালিক তা অস্বীকার করেছে।

এর আগে সেনা প্রত্যাহারের কার্যক্রমের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের সেনাদের কাছে সাতটি সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর করে যুক্তরাষ্ট্র।

এরইমধ্যে আফগানিস্তান থেকে ৯৫ শতাংশ মার্কিন সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি, শান্তিপ্রক্রিয়া ও দুই দেশের রাজনীতি-অর্থনীতি এবং নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনাও করেছিলেন তালেবান সদস্যরা।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং হি বলেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা চলে যাওয়ায় আবারো দেশটির নাগরিকরা স্বাভাবিক পরিবেশ পেল। আশা করবো তালেবান দেশটির গঠনমূলক কাজে সহায়তা করবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে নিজেদের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকেই তালেবান ও আফগান সেনাদের মধ্যকার তীব্র লড়াইয়ের মধ্যেই চীনে এই সফর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তালেবানের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর বাকি সদস্যদের আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার কথা রয়েছে।

তবে দেশটিতে মার্কিন কূটনীতিকদের নিরাপত্তার জন্য ছয়শোর বেশি সেনা মোতায়েন থাকবে। এছাড়া, প্রয়োজনে তালেবান হামলা ঠেকাতে আফগানিস্তানে মার্কিন বিমান হামলা চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।