পশ্চিমবঙ্গে বন্যায় ১৬ জনের মৃত্যু

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নিম্নচাপের কারণে অতিবৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দেয়াল ভেঙে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবারপ্রতি লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যের বন্যায় মৃতদের তালিকা তৈরি করে দ্রুত দুর্গতদের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন অন্য মন্ত্রীদের বলেন, নিজের জেলায় বানভাসিদের পাশে থেকে কাজ করুন। ত্রাণ যেন সময়মতো পৌঁছে দেয়া হয়, সেটা দেখুন। সমস্যা হলে ত্রাণমন্ত্রী জাভেদ খান ও পানিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।

বৃষ্টি কিছুটা কমলেও বন্যা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা দামোদর ভ্যালি করপোরেশনের (ডিভিসি) একাধিক জলাধার থেকে পানি ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

ডিভিসির পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়ার ফলে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দেড় লাখ কিউসেক পানি ছাড়তে হচ্ছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিপদের আশঙ্কায় ৩৯ হাজার ৩৮০ জনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তাদের রাজ্যে তৈরি ৩৫০টি ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে।

সোমবার হাওড়ার আমতা ও উদয় নারায়ণপুরের ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা সম্পূর্ণ পানির তলায় চলে যায়। এই দুটি ব্লকের আড়াই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। উদ্ধারকাজ শুরু করেছে সরকার। রূপনারায়ণ ও মুন্ডেশ্বরী নদীতে পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় খানাকুলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।

এখানকার পানিবন্দি ৩০ জনকে বিমানবাহিনীর হেলকপ্টার উদ্ধার করেছে। কংসাবতী ব্যারাজ থেকে পানি ছাড়ায় পাঁশকুড়া রানিহাটি এলাকার নদী বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।

সোমবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, দুই বর্ধমানের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যান রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।

অন্য মন্ত্রীদের বন্যা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করার নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি নিজেও বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন বলে সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

হেলিকপ্টারে দুর্গতদের সাহায্যের সঙ্গে ড্রোন উড়িয়ে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে প্রশাসন। মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ঘাটালে অনেকবার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে এসেছি। এবার দেখছি ১৯৭৮ সালের চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহ। এ রকম পরিস্থিতি আগে কখনও দেখেনি।