পরীমনির রিমান্ড মঞ্জুর: ক্ষমা চাইলেন দুই বিচারক

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর করায় হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দুই বিচারক।

বুধবার ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন জানান তারা। এর আগে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে তিন দফা রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনায় প্রশ্ন তুলে হাইকোর্ট বলেন, পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বোঝা উচিত,

মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। আইনি ভিত্তি ছাড়া পুলিশ রিমান্ড চাইতে পারে না। অথচ পুলিশ পরীমনিকে তিন বার রিমান্ডে নিয়েছে, যা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

মাদক মামলায় পরীমনিকে রিমান্ডে নেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে লিখিত আদেশে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর ৫ পৃষ্ঠার ওই আদেশ প্রকাশিত হয়।

হাইকোর্ট বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরীমনিকে তিন বার রিমান্ডে নিয়েছেন। যেখানে প্রথমবারই রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার যথেষ্ট সময় পেয়েছেন।

গত ৪ আগস্ট বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র‍্যাব। এ সময় পরীমনির বাসা থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য জব্দের দাবি করা হয়। পরে গত ৫ আগস্ট র‍্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে পরীমনি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা দায়ের করে।

এরপর তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে গত ২১ আগস্ট রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চিত্র নায়িকা পরীমনিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

পরে গত ২২ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে পরীমনির জামিন আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত। তবে নতুন করে তার জামিন শুনানির জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করে পরীমনিকে জামিন দেন বিচারিক আদালত।

এদিকে গত ২৬ আগস্ট পরীমনির বিরুদ্ধে হওয়া মাদক মামলার জামিন আবেদনের ওপর দ্রুত শুনানি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে দীর্ঘদিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর জামিন শুনানির বিষয়ে দিন নির্ধারণের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, রুলে তাও জানতে চান আদালত। ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয় এবং সেদিন পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট।

এছাড়াও গত ২৯ আগস্ট মাদক মামলায় আটক চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেওয়ার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ প্রার্থনা করে একটি আবেদন করা হয়। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন এ আবেদন জানান।

পরে পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে এ সংক্রান্ত নথি ও তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন হাইকোর্ট। আর ১৫ সেপ্টেম্বর তাদের হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়। একইসঙ্গে শুনানির দিনও নির্ধারণ করা হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হন পরীমনি। সূত্র: সময় নিউজ।