ইরানের সঙ্গে শিগগির পরমাণু আলোচনা শুরু: যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের সঙ্গে পুনরায় পরমাণু আলোচনা শুরুর আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার পরমাণু সক্ষমতায় ইরান ‘উদ্বেগজনক’ উন্নতি করছে মন্তব্য করে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা। খবর এএফপি’র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা অল্প সময়ের মধ্যে ভিয়েনায় আলোচনায় ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রও সোমবার বলেছেন, নভেম্বরের শুরুর দিকে নতুন করে আলোচনা শুরু হতে পারে।

এদিকে মঙ্গল ও বুধবারে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা প্রতিনিধি দলের আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ইরানের পরমাণু ইস্যু থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আইয়েল হুলতা ও হোয়াইট হাউজ প্রতিনিধি জ্যাক সুলিভান ‘যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল স্ট্র্যাটেজিক কনসালটেটিভ গ্রুপ’ শীর্ষক এই বৈঠকে নিজ নিজ দেশের পক্ষে কুটনৈতিক, সামরিক ও গোয়েন্দা অ্যাজেন্সির প্রতিনিধিত্ব করবেন।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ২০১৫ সালে সাত জাতির যে চুক্তি হয়েছিল সেখান থেকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরে যান। পরে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। বাইডেন প্রশাসন এখন স্থবির থাকা আলোচনাকে কুটনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করছে।

মার্কিন জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা বলেন, ভিয়েনায় আলোচনার পথ খোলা রয়েছে। ইরানও বেশ কয়েকটি দেশকে ইঙ্গিত করেছে তারা আলোচনায় ফিরতে প্রস্তুত। আমরা দেখতে চাই তারা এই আলোচনায় গঠনমূলক নাকি অন্য পথে যুক্ত থাকতে চায়।

অন্যদিকে ইসরায়েলের সংশয় থাকার পরও মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলেছে, বাইডেন প্রশাসন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে কূটনৈতিক পথই সবচেয়ে ভালো। যদিও হোয়াইট হাউজ ও ইসরায়েলের নব নির্মিত সরকার এই ব্যাপারে একমত হয়েছে যে,

ট্রাম্প পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরানোর পর ইরান খুব দ্রুত পরমাণু কর্মসূচিতে এগিয়ে গেছে। তবে ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পারমাণবিক পরিকল্পনা অস্ত্র বা বোমার জন্য নয়, পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় তারা৷

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি করেছিল ইরান। চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমানোর পাশাপাশি নিজেদের পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের প্রবেশে একমত হয়েছিল।

বিনিময়ে দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হয়। চুক্তিটি করেছিল ওবামা প্রশাসন। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয় এবং পুনরায় ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়।