সরকারকে সরে যেতেই হবে : ফখরুল

দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঐক্যের মধ্য দিয়ে দুর্বার একটা গণআন্দোলন সৃষ্টি করি।

সেই গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অবৈধ সরকার যারা বিনা নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তাদের সরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমরা নির্মাণ করি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের দ্বিতীয় শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আবরার হত্যার পরে সেদিন যারা সোচ্চার হয়েছিল সে তরুণ সমাজের আজকে কোনো কর্মসূচি দেখতে পাচ্ছি না। পরিবর্তন আসে সবসময় তরুণ এবং যুবকদের মাধ্যমে।

অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বাংলাদেশে সেই তরুণ-যুবকদেরকে আমরা সামনে দেখতে পাচ্ছি না। আবরার হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আবরার হত্যা এ দেশের যে সামগ্রিক সংকট, সেই সংকটের একটা প্রতিচ্ছবি।

বহু আবরার হত্যা হয়েছে এবং আমরা সকলেই জানি আমাদের পাঁচ শতের অধিক নেতাকর্মীদের গুম করে ফেলা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে এর কোনোটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।

এটি একটি সুদূরপ্রসারি আধিপত্যবাদী চক্রান্ত। তিনি বলেন, আজকে দেশে যে সংকট চলছে। এটা বিএনপির একার সংকট নয়, গোটা জাতির সংকট। এই সংকট থেকে উদ্ধার হতে হলে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে।

বিএনপি তো আছেই, সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক শক্তিগুলো আছে, রাজনৈতিক দলগুলো আছে, ব্যক্তিরা আছেন, আমাদের সামাজিক সংগঠনগুলো আছে, পেশাজীবী সংগঠনগুলো আছে সবাইকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সুকৌশলে গণতন্ত্রের একটা মোড়ক লাগিয়ে এবং গণতন্ত্রের কথা বলে সরকার আবার একই কায়দায় এদেশের সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল এবং একটা তাবেদার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

এদেশের মানুষ সবাই চিরকাল লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে, তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছে সবসময়, যুগ যুগ ধরে।

আমি বিশ্বাস করি এবং আমি আশাবাদী যে কখনোই বাংলাদেশের মানুষকে এভাবে পরাজিত করা সম্ভব হবে না। এই সরকারকে অবশ্যই সরে যেতে হবে এবং জনগণের কাছে তাদেরকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার প্রবাসী সাংবাদিক কনক সারোয়ারের বোনকে গ্রেপ্তারের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, কনক সারোয়ার এই সরকারের অত্যাচারে নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেছেন

এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখান থেকে তিনি কিছু সত্য কথা তার চ্যানেলের মাধ্যমে প্রকাশ করে প্রচার করেছেন। তিনি বলেন, এটা নতুন নয়। এটা আমরা দেখেছি আগে থেকে।

এর আগে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ওপর নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু আমাদের কত নেতাকর্মীকে তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের মা-বোনকে গ্রেফতার করা হয়েছে,

তাদের বাড়ি-ঘর ভেঙে দেয়া হয়েছে, এটা আমরা অনেকেই জানি না। গত কয়েক বছরে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বাসায় একই কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে।