চীনের চাপে নত হবে না তাইওয়ান

চীনের চাপের কাছে মাথা নত করবেন না বলে জানিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক জীবন ব্যবস্থার সুরক্ষায় দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার অব্যাহত রাখা হবে।-খবর আল-জাজিরার

রোববার ১০ অক্টোবর যখন তিনি এমন মন্তব্য করেন, তার আগের দিন চীনের সঙ্গে স্বশাসিত ভূখণ্ডটিকে শান্তিপূর্ণভাবে একীভূতকরণে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আবারো অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। বেইজিংয়ের শাসন মেনে নিতে তাইওয়ানের ওপর সামরিক ও রাজনৈতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে। দ্বীপাঞ্চলটিকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করছে চীনারা।

তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলে নিয়মিতভাবেই চীনা যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশ ঘটছে। কেবল অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে দ্বীপটির কাছ দিয়ে ১৪৯টি চীনা সামরিক বিমান উড়াল দিয়েছে। এতে তাইওয়ানও নিজের যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন করে সতর্কতা জারি করেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

রাজধানী তাইপের মধ্যাঞ্চলে তাইওয়ানের জাতীয় দিবস উদযাপনে একটি সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার সময় সাই ইং-য়েন বলেন, পুরো তাইওয়ান প্রণালীতে পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। তবে সরকার হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। কোনো চাপের কাছে তাইওয়ান সরকার মাথা নত করবে, এমন ভ্রমও লালন করা উচিত না।

প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বাইরে দেয়া এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, তাইওয়ান তার জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জোরদার অব্যাহত রাখবে। চীনের তৈরি করা পথে যাতে আমাদের পা দিতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখব।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট বলছেন, চীন আমাদের জন্য যে প্রস্তাব উত্থাপন করছে, তা তাইওয়ানের জনগণের জন্য মুক্ত ও গণতান্ত্রিক না, কিংবা দুই কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার সার্বভৌমত্বেরও স্বীকৃতি না। আনুষ্ঠানিকভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন হিসেবে পরিচিত তাইওয়ান গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত।

চীন মূল ভূখণ্ডের ১৬১ কিলোমিটার উপকূলজুড়ে ভূখণ্ডটি অবস্থিত। ১৯৪৯ সালে চীনা গৃহযুদ্ধের পর থেকে দুই অঞ্চল আলাদাভাবে শাসিত হচ্ছে। তখন কমিউনিস্টরা বেইজিংয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠা করে, আর পরাজিত জাতীয়তাবাদীরা তাইওয়ানে পলায়ন করে আলাদাভাবে সরকার গঠন করে।

কার্যত স্বাধীন তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখছে বেইজিং এবং স্বায়ত্তশাসনের আদলে ‘এক দেশ, দুই নীতি’ ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু তাইওয়ানের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল তা প্রত্যাখ্যান করেছে।