যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে বেনাপোল, সীমাহীন দুর্ভোগে মানুষ

সীমাহীন দুর্ভোগে সাধারন মানুষ ও পাসপোর্ট যাত্রীরা বেনাপোলে যানজটের কারনে। দেড় মাস অতিবাহিত হলেও এর কোন সুরাহা নেই। গতানুগতিক চলছে সবকিছু । দেখ ভাল এর যেন নেই কেউ। দিনের পর দিন যানজট লেগে থাকায় স্কুল কলেজ গামি শিক্ষার্থীরা ও পড়েছে বিপাকে।

তারা যেতে পারছে না ভ্যান রিক্সায় চড়ে তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্টানে। বেনাপোল দেশের বৃহত্তম স্থল বন্দর হওয়ায় এ পথে আমদানি রফতানি বানিজ্য হয় বেশী সেই সাথে ভারতে বিভিন্ন ভিসায় যাতায়াত করে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের মানুষ।

বিদেশীরাও এ পথে ভারত বাংলাদেশ যাতায়াত করে থাকে। বেনাপোল স্থল বন্দর এলাকার সামজিক ব্যক্তিত্ব শাহাজাহান বলেন, বন্দর এলাকায় যানজট এতটা প্রকট আকার ধারনে করেছে যে,বেনাপোল ছেড়ে এখন শার্শা নাভারন পর্যন্ত গড়িয়েছে।

শার্শা উপজেলা শেষ করে ঝিকরগাছার সীমান্ত পর্যন্ত রপ্তানি পণ্য নিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় মানুষ চলাচলে চরম অসুবিধায় পড়ছে। দুরপাল্লা এবং লোকাল পরিবহন গুলো ও বন্দর এলাকার নির্দিষ্ট জায়গায় পৌছাতে না পারায় বেনাপোল থেকে যশোর খুলনা ঢাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় যেতেও হিমশিম খাচ্ছে মানুষগুলি।

এ বিষয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ প্রশাসনের লোকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বেনাপোল বন্দরের ব্যবসায়ি আমিন উদ্দিন বলেন, এই বন্দরে জায়গা সংকটের কারনে আমদানি রফতানি বাহি পরিবহন জায়গা দিতে না পারায় হচ্ছে তীব্র জানজট। বন্দরে আছে মাত্র ৪০ হাজার মেট্রিকটন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন জায়গা।

সেখানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লক্ষ টন পণ্য উঠানামা এবং রপ্তানি পণ্য বেড়ে যাওয়ায় হচ্ছে মহাযানজট। ভারতে চিকিৎসা করতে যাওয়া নোয়াখালী থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রী শামিম হাসান বলেন, বেনাপোলের কাগজপুকুর নামক একটি স্থানে বাস থেকে নেমে হেটে আসছি চেকপোষ্ট পর্যন্ত।

আমি হাফিয়ে গেছি। অসুস্থ অবস্থায় এত পথ হেটে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আরো সাথে ছিল ল্যাগেজ। একই বর্ণনা দেন এই শহরে আসা আরো অনেক পাসপোর্ট যাত্রী। বিশিষ্ট সিএন্ডএফ ব্যবসায়ি আব্দুল মুন্নাফ বলেন, সর্বকালের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বেনাপোলের যানজট।

বেনাপোল দিয়ে ভারতের কোলকাতা শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এ পথে ব্যবায়িরা আমদানি রফতানিতে বেশী স্বাচ্ছন্দবোধ করে। তবে সম্প্রতি যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে ব্যবসায়িদের লোকশানে পড়তে হবে। রফতানি পণ্য বাহি ট্রাক বন্দরে ১৫ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করছে ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায়।

আর ট্রাক প্রতি প্রতিদিন গুনতে হচ্ছে বাড়তি ২ থেকে ৩ হাজার করে টাকা। গরমে অতিষ্ট হয়ে চালকরাও ভুগছে নানা রোগ ব্যাধিতে। গত তিন দিন আগে এক চালক ট্রাকের মধ্যে ষ্ট্রক করে মারাও গেছে।

তবে শোনা যাচ্ছে যানজট বেশী হওয়ার ফলে এক শ্রেনীর অশুভ চক্র চাঁদাবাজিও করছে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় দাড়িয়ে। বেনাপোল স্থল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার বলেন, সম্প্রতি এই বন্দর দিয়ে রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্দর এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ খুব তাড়াতাড়ি আরো জমি অধিগ্রহন করতে যাচ্ছে যানজট নিরসনের কথা ভেবে। আর এই যানজটের বেশী সৃষ্টি হয়েছে এ পথে সম্প্রতি মালায়েশিয়া থেকে আমদানিকৃত সয়াবিন ভুষি যাচ্ছে ভারতে।