ডেঙ্গুর সঙ্গে মিলল ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের যোগসূত্র

মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর সঙ্গে প্রাণঘাতী ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাক রোগের বিরল যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন ভারতের চিকিৎসকরা।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠার ১৫ দিনের মধ্যে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৯ বছর বয়সী এক পুরুষ রোগী।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শনিবার নিশ্চিত করে এ তথ্য। জানায়, ডেঙ্গুর পর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ওই রোগীর নাম তালেব মোহাম্মদ। তিনি গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা।

রোগী তালেব মোহাম্মদের চিকিৎসায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলোর নাক-কান-গলাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট ড. সুরেশ সিং। তিনি বলেন, হঠাৎ এক চোখের দৃষ্টি হারিয়ে আমাদের হাসপাতালে আসেন তালেব। এরপরই ডেঙ্গু জ্বরের পর ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগের যোগসূত্রের বিষয়টি ধরা পড়ে।

ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠার পর মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল তো বটেই, নজিরবিহীনও বলা যায়। সাধারণ ডায়াবেটিস, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ও অন্যান্য সংক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। মিউকর প্রজাতির কয়েকটি ছত্রাকের মাধ্যমে প্রাণঘাতী এ রোগ হতে পারে।

নাক, চোখ, সাইনাস ও মস্তিষ্কের স্নায়ুর ওপর আক্রমণ করে মিউকরজাতীয় ছত্রাক। এটি এত দ্রুত ছড়ায় যে শনাক্ত ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়ার আগেই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে রোগটি।

মৃত্যু এড়ানো গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেহে স্থায়ী জটিলতা রেখে যায় রোগটি। একই হাসপাতালের নাক-কান-গলাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট এবং মাথা ও গলার অস্ত্রোপচার বিশেষজ্ঞ ড. অতুল আহুজা বলেন, ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠার পর বিশেষ করে নাক ও চোখে মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণের ক্ষেত্রে দ্রুত রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা দেয়া খুব জরুরি।

কারণ দ্রুততম সময়ে সেরা চিকিৎসা নিশ্চিতের পরও রোগী স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে; এমনকি রোগ বেশি ছড়িয়ে পড়লে চোখ ফেলেও দিতে হতে পারে।

করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে ভারতজুড়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। প্রায় সবাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের দেহে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। বেশির ভাগেরই ডায়াবেটিসের মাত্রা প্রকট ছিল।