নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না যশোর-চুকনগর সড়কের নির্মাণ কাজ

নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না যশোর-চুকনগর সড়কের দু’লেনের নির্মাণ কাজ। এযাবৎ সড়কটির প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে। যা পরিপূর্ণ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত আরও দেড় বছর সময় প্রস্তাবনা করা হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণেই সৃষ্টি হয়েছে নির্মাণ জটিলতা। তাতেই কমেছে কাজের গতি। সূত্রমতে, যশোর-চুকনগর সড়কটির দৈর্ঘ্য ৩৮ দশমিক ২৬৫ কিলোমিটার।

সড়কটি যশোর সদর ছাড়াও জেলার মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলা হয়ে চুকনগরে যেয়ে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের সাথে মিশেছে। সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দরের আমদানিকৃত মালামাল নিয়ে ট্রাকগুলো এ সড়ক হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় চলাচল করে।

আঞ্চলিক সড়ক হলেও ঢাকাগামী বিভিন্ন পরিবহনসহ নিয়মিত অন্যান্য যানও চলাচল করে এটি দিয়ে। এক কথায় যশোর-খুলনা ও যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক দুটির বিকল্প রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে যশোর-চুকনগর সড়কটি।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, যশোর-চুকনগর সড়কটি যানবাহনের চাপে বছরের বেশিরভাগ সময়ই ভাঙাচোরা অবস্থায় থাকে। যেকারণে প্রতি বছরই সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করতে হয়।

এভাবে কয়েক দফা সংস্কার করার পরও ২০২০ সাল নাগাদ সড়কটির অধিকাংশ স্থান ভেঙে খানা-খন্দে পরিণত হয়। এরপর বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় এনে যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃপক্ষ সড়কটি উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সড়কটি নতুন করে ভিত নির্মাণের মাধ্যমে ডাবল লেনে ১০.৩০ মিটার বা ৩৪ ফুটে উন্নীত করার প্রকল্প একনেকে পাস হয়। সড়ক উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে ১১.০৬০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ,

রিজিড পেভমেন্ট এক হাজার তিনশ’ ফুট, সড়কে তিনটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, আরসিসি পিটসহ ইইউ ড্রেন নির্মাণ দুই হাজার ৬শ’ ফুট, রক্ষাপ্রদ কাজ (আরসিসি প্যালাসাইডিং) দুই হাজার ৫৬৭ ফুট, ইন্টারসেকশন একটি ও একটি দ্বিতল অফিস ভবন নির্মাণ। যার পরিধি হবে ১৫শ’ স্কয়ার ফুট।

যার মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩৬৬ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ২০ জুলাই থেকে শুরু হয় সড়কটির নির্মাণ কাজ। যা শেষ হওয়ার কথা ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ সালে।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গত বছর সড়কটি নির্মাণের জন্য ৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছিলো। চলতি বছর এ বরাদ্দ এসেছে আরও ৭০ কোটি টাকা।

ইতিমধ্যে বরাদ্দের টাকায় সড়কের ৫০ শতাংশ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শ্লথ হয়ে গেছে এর নির্মাণ প্রক্রিয়া।

নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে কয়েক দফায় বৃষ্টি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। যেকারণে কাজটি পরিপূর্ণ সম্পন্নের জন্য ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত বর্ধিত সময়ের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।

এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন আরও বলেন, ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে সড়কটির মূল কাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে সড়কের দু’ধারে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ রয়েছে।

যা সম্পন্ন হতে আরও কিছু সময় লাগতে পারে। কেননা, কাজ চলাকালীন সময়ে আবহাওয়াগত আরও কিছু সমস্যা আমাদের ফেস করতে হতে পারে। সবকিছু বিবেচনায় রেখেই বর্ধিত এ সময়ের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

এদিকে কাজে ধীরগতি হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসীসহ সড়কটি ব্যবহারকারীরা। সড়কের বালি ও ধূলিঝড়ে বিপাকে পড়ছেন তারা। নিত্য ঘটনায় পরিণত হওয়ায় চরমে পৌঁছেছে পরিস্থিতি। বিঘ্ন ঘটছে যান চলাচলেও।