আমি উসিলা মাত্র, সব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী: মোমেন

আমি উসিলা মাত্র, সব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সিলেটের উন্নয়নের জন্য তিনি দুই হাত খুলে দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের প্রতি খুব আন্তরিক। সিলেটের উন্নয়নে বরাদ্দ দিতে তিনি দ্বিধা করেন না। না চাইতেও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনেক কিছু পাচ্ছে সিলেট।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সিলেট নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে সিটি করপোরেশন (সিসিক) আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত ও প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনায়, ঢাকা-সিলেট ছয়লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পের অনুমোদন ও নগরের উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছে সিসিক।

সংবর্ধনার জবাবে প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার কাজ করছে। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ব নেতাদের বাণীতে যার স্বীকৃতি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি তার সরকারের একটি দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। সিসিকের দেওয়া এই নাগরিক সংবর্ধনা সরকারের উন্নয়ন যাত্রার প্রতি সম্মান দেখানো বলেই মনে করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিলেট নগরের উন্নয়নে ১২২৮ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। ফলে সিলেটের যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে ব্যাপক উন্নত হচ্ছে। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অত্যাধুনিক হচ্ছে।

এছাড়া বৃহত্তর সিলেটের প্রত্যেকটি কলেজে বিশেষ অনুদান দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে মডেল সিলেট গড়ে তোলার হচ্ছে। শুধু টাকা পেলেই হয় না, কাজে লাগাতে হয়।

সাবেক অর্থমন্ত্রী সিলেটের উন্নয়নে অনেক বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু টাকা ফেরত গেছে। বর্তমান মেয়র ও কাউন্সিলররা বরাদ্দ করা টাকা কাজে লাগাচ্ছেন। ফলে সিলেটের উন্নয়ন হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই নগরী আমাদের সবার। এখানে কে কোন মতের-দলের তা দেখা মুখ্য নয়। আমরা সবাই সিলেটের-এটাই মূল বিষয়। আমাদের সবার হৃদয়ে সিলেট।

অনেকে বলেন মেয়র অন্য দলের, তাই আপনি উনার অনেক প্রস্তাব নেবেন না। কিন্তু আমি বলি, সিলেট তো আমাদের সবার, এমনকি মেয়র সাহেবরও। সুতরাং বৃহত্তর সিলেটের মঙ্গলের জন্য সব করতে হবে।

ড. মোমেন আরও বলেন, আজকের সংবর্ধনার আয়োজন আরিফ করেছেন, আমাকে কেউ কেউ বলেছেন। আমি বলেছি- আরিফ সাহেব করেননি, করেছে সিটি করপোরেশন।

এটা আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত এই কারণে প্রধানমন্ত্রী এত ভালো কাজ করছেন, মেয়র অন্য দলের লোক হয়েও সেটি স্বীকার করছেন। সেটা আপনারা গ্রহণ করতেছে না।

আপনাদের তো ভালো লাগার কথা। আমি তো হলাম উসিলা মাত্র। তারা আমাকে নয়, সম্মান দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীকে। যিনি আমাদের প্রতি সদয় হয়ে এতকিছু করছেন।

সুতরাং সিলেটের উন্নয়নে সবাই মিলেমিশে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দ্যেশে মানপত্র পাঠ করেন সিসিকের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ইয়াসমীন নাহার রুমা।

পরে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মানপত্র, সম্মাননা ক্রেষ্ট ও সংবর্ধনা স্মারক স্বর্ণের ‘নগর চাবি’ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। এর আগে সিসিক মেয়র, কাউন্সিলররা সংবর্ধিত অথিতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী স্বাগত বক্তব্যে বলেন, নগরবাসীর পক্ষ থেকে সিসিক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে পারায় গৌরবান্বিত মনে করছি।

নগরীর উন্নয়নে দলমতে ঊর্ধ্ব থেকে সবাইকেই কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সিসিকের উন্নয়নে নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতার কথাও স্মরণ করেন মেয়র। তাছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতায় করোনা মহামারির সংকটেও সিসিক সর্বাধিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে সক্ষম হয়েছে।

সিলেটের উন্নয়নে তার এই অবদানের প্রতি সম্মান জানাতেই এই নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঐকান্তিক সহযোগিতায় সিলেট এখন আড়াই গুণ বেড়েছে।

ঐতিহাসিক এই কাজে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ অবদানের জন্য সিসিক মেয়র কৃতজ্ঞতা জানান। সেসঙ্গে সিলেটের উন্নয়নে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের অবদানের কথা স্মরণ করেন সিসিক মেয়র।