পাকিস্তানের কাছ থেকে সব পাওনা ও হিস্যা আদায় করতে হবে

ফাইল ছবি

একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সব শক্তিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের আদায় করতে হবে। আমাদের প্রয়োজন ক্ষতিপূরণ আদায়ের ব্যবস্থা করা।

পাকিস্তানের কাছে সব সম্পদের পাওনা অর্থ, হিস্যা আদায় করা আজ আমাদের একটা কর্তব্য। এটা আমাদের করতে হবে। পাকিস্তানকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যেতে হবে।

এসব ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দল কথা বলে না। মনে হয় যেন সবকিছুর দায়দায়িত্ব একমাত্র আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার।

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

একাত্তরের ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে অনেক দেরি হয়ে গেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নিয়ে বছরে একদিন চেঁচামেচি করে কোনো লাভ হবে না।

এতে কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে না। জাতিসংঘে এজেন্ডা নিয়ে কাজ করতে হবে। সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি এবং আমাদের কিছু লোক লেগে থাকতে হবে।

হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ একদিন সমাবেশের আয়োজন করল, অনেক লোক হলো, আমরা নেতারা ভাষণ দিলাম। কিন্তু এতে কাজের কাজ কী হলো?

সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ইহুদি হত্যা থেকে শুরু করে পৃথিবীর অনেক হত্যাকাণ্ডই স্বীকৃতি পায়নি। বহুদিন পর মিয়ানমারে যে গণহত্যা হয়েছে সেটা গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

কিন্তু পাকিস্তান ‘ডোন্ট কেয়ার’। তারা আমাদের কেয়ার করে না। পাকিস্তান আজ পর্যন্ত একাত্তরের গণহত্যার জন্য কোনো ফোরামে দুঃখ প্রকাশ করেনি।

তারা বছরের পর বছর আমাদের ঘাড়ের ওপর তাদের নাগরিকদের চাপিয়ে রেখেছে। কথা দিয়েও ফেরত নেয়নি। পাকিস্তান যুদ্ধের পরে আমাদের পাওনা আজ পর্যন্ত দেয়নি। এটা নিয়ে তাদের জবাবদিহিও করতে হয় না।

এ সময় সবাইকে এ বিষয়ে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বলে যারা বড় বড় কথা বলেন, তারা গণহত্যার স্বীকৃতি নিয়ে একটা কথাও বলে না। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে কথা বলতে হবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দাবি আমাদেরকেই এজেন্ডা নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে আমাদের পার্টি বছরে শুধু একটা মিটিং করলেই এ দাবি বাস্তবায়ন হবে না।

আমরা এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার লক্ষ্যে গণহত্যা দিবস পালন করছি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা বিভিন্নভাবে বাংলার মাটিতে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল।

বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করেছিলেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরে জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ বন্ধ করেছিল।

তারপর কেউ এটা করার সাহস করেনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার সাহস দেখিয়েছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যিনি করেছেন তার পক্ষেই সম্ভব একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় করা। সেই সাহস, মনোবল ও নেতৃত্বের দক্ষতা কেবল শেখ হাসিনাই রয়েছে।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আলোচনার বিষয়বস্তু জেনে বক্তব্য রাখার আহ্বান জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, অনেকেই বক্তব্যের সময় বিষয়বস্তুর ধারের কাছেও থাকে না।

আমাদের বিষয়বস্তুর মধ্য থেকে কথা বলতে হবে। গলা আরও উঁচু করুন। এ দাবিতে আরও সোচ্চার হোন। আগামী দিনগুলোতে এটা আমাদের দায়িত্ব।