‘পাকিস্তানি ভাবধারার রাজনীতি থেকে বের হতে পারেনি বিএনপি’

obidul kader
ফাইল ছবি

বিএনপি এখনও পাকিস্তানি ভাবধারার রাজনীতি থেকে বের হতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তাদের অন্তরে এখনও পাকিস্তান রয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার (১১ এপ্রিল) ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন ৷ তিনি গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে সেতুমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুঃসময়ের কথা বলে দেশের জনগণকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন। আসলে দেশে কোনো দুঃসময় নেই, দুঃসময় যাচ্ছে বিএনপির রাজনীতিতে। তাদের নেতাকর্মীরা এখন হতাশ। শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্ব ও সক্ষমতা নিয়ে তারা সন্দিহান।

বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন দিশেহারা পথিক। তারা এখন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ব্যর্থ নেতৃত্ব থেকে মুক্তি চায়। আর জনগণ চায় বিএনপির আমলের দুঃশাসন ভুলে যেতে।

ফলে জনগণ বার বার আওয়ামী লীগকেই বেছে নিয়েছে এবং বরাবরের মতো আগামী নির্বাচনেও জনগণ আওয়ামী লীগকেই বেছে নেবে। সেটা বুঝতে পেরেই বিএনপি এখন দুঃসহ যন্ত্রণায় ভুগছে।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি পাকিস্তানে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো ধারণ না করলে, না বুঝলে তাদের নাকি মুক্তি হবে না। বিএনপি মহাসচিবের এ ধরনের বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়, তারা এখনও পাকিস্তানি ভাবধারার রাজনীতি থেকে বের হতে পারেনি। তাদের অন্তরে এখনও পাকিস্তান রয়ে গেছে।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও বাংলাদেশের স্বাধীনতায় তারা বিশ্বাস করে না এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না। বিএনপিকে বুঝতে হবে পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক সব সূচকে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে। তাই বাংলাদেশ আর পাকিস্তান হবে না।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবি মতে মুক্তির নাকি একটাই পথ, জিয়াউর রহমানের দেখানো পথে গিয়ে একটা ঘটনা ঘটানো।

জিয়াউর রহমান তো হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে গণতন্ত্রের সমাধি রচনা করে তার ওপর পাকিস্তানি ভাবধারার বিষবৃক্ষ বীজ বপন করেছিল, অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিল। জনগণ তাই শঙ্কায় আছে, না জানি বিএনপি কখন কী দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসে।

কারণ বিএনপির ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করার ইতিহাস, গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে লুণ্ঠন ও দুর্নীতির রাজত্ব কায়েমের ইতিহাস। বিএনপি মহাসচিব দাবি করেছেন যে, তারা নাকি নির্বাচনে বিশ্বাস করে! ফলে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এটা কী তাদের মনের কথা?

কারণ তারা একদিকে বলছে নির্বাচনে বিশ্বাস করে। অন্যদিকে ক্ষমতা দখলের নেশায় দেশ ও গণবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বিএনপির কাছে নির্বাচন মানে মাগুরা মার্কা নির্বাচন, ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের পাশাপাশি ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি।

তাদের কাজই হচ্ছে অপতৎপরতায় লিপ্ত থেকে দুরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জাতির কপালে একের পর এক কলঙ্কের তিলক পরানো। বিএনপি নির্বাচনের নামে আসলে কী চায়, সেটা তাদের জনগণের সামনে স্পষ্ট করতে হবে।

তারা তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতা পরিবর্তনের উপায় হিসেবে যদি সত্যিকার অর্থে নির্বাচনে বিশ্বাস আনে তাহলে তা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির নেতারা বার বার বলছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন মীমাংসিত একটি বিষয়। কাজেই নতুন করে এ নিয়ে কোনো প্রকার দুঃস্বপ্ন দেখে লাভ নেই।

নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার শুধু নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে। তাই বিএনপিকে বলবো, নির্বাচনে যদি বিশ্বাস করেন, জনগণের ওপর যদি আস্থা থাকে তবে ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন। আশা করি বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হবে।