বিএনপিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায় সরকার : ফখরুল

mirza fokrul islam
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সরকার আবার সেই পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার দুপুরে গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের পর দলের নেতা কর্মী দের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনা তুলে ধরে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় হেলমেটধারী প্রকৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করে বিএনপি নেতা মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার ও প্রায় ২৪ জন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতার নাম উল্লেখ করে প্রায় ১২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আমরা মনে করি অবৈধ সরকার পুনরায় পুরোনো খেলায় মেতে উঠেছে। তিনি বলেন, টানা দুই দিনে সংঘর্ষ বন্ধ করতে না পারায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতাকে যখন জনগণ দায়ী করছে সেই সময়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপির নিরাপরাধ নেতা মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ নিজেদের ব্যর্থতা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আড়াল করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উদঘাটিত হয়েছে হামলাকারীরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী। ভিডিও ফুটেজ থেকে অন্তত তিন জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে যারা ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।

গণমাধ্যমের রিপোর্টে এটাও স্পষ্ট যে, প্রধানত চাঁদাবাজির কারণে এবং নিজেদের প্রভাব বিস্তারের ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের ভয়াবহ সন্ত্রাসীরা এই ঘটনার জন্য দায়ী। শুধু এই ঘটনাই নয়, নিউ মার্কেটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই শাসক গোষ্ঠীর ছাত্র ছায়ায় ব্যাপক চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সংঘটিত হচ্ছে। ছাত্রলীগ, যুব লীগ, পুলিশের সহায়তায় সেখানে অপরাধ জগত গড়ে তুলেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণমাধ্যমের রিপোর্টিংয়ে বেরিয়ে এসেছে এই পুরো এলাকাটা ইনক্লুডিং টিচার ট্রেনিং সেন্টার, হোস্টেল সবগুলোই ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে। এমনকি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের বরাদ্ধকৃত যে রুম সেই রুমও তারা সাবলেট করে ভাড়া দেয়। এটাও রিপোর্টে এসেছে।

তিনি বলেন, আবার এটাও এসেছে ছাত্রলীগের সুনির্দিষ্ট কমিটি না থাকার কারণে অনেকগুলো গ্রুপ আছে। সেই গ্রুপগুলোর বিরোধের কারণে এসব ঘটনা প্রায়ই ঘটে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার বিরুদ্ধে যখন জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে তখন জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে সরকার উদ্দেশ্য মূলকভাবেই এই সংষর্ষের ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপিকে জড়াচ্ছে। সরকার পূর্বের মতোই মামলার বেড়াজালে বিএনপি নেতাকর্মীদের বন্দি করার চক্রান্ত করছে।

তিনি আরো বলেন, মামলা, গ্রেপ্তার, গুম, খুন, হত্যা এই সরকারের প্রধান অস্ত্র, যা দিয়ে বিএনপিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে। নিউ মার্কেটের সন্ত্রাসী সংঘর্ষ, পুলিশের ভূমিকা এবং পরবর্তিতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও মামলা দায়ের আবারো প্রমাণ করল আওয়ামী লীগ সরকার ভয় দেখিয়ে, নির্যাতন করে, হত্যা করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়।