ইমরান খানের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনে মামলা

মসজিদে নববীতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে হেনস্তার ঘটনায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনে মামলা হয়েছে।

রোববার দেশটির ফয়সালাবাদে মসজিদে নববীতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে হেনস্তা এবং মসজিদ অপবিত্র করে ধর্মীয় বিধি-বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে এই মামলা দায়ের হয়েছে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন ইমরান খান ও তার দলের শীর্ষ শতাধিক নেতার বিরুদ্ধে দায়ের করা এই মামলার কপি হাতে পেয়েছে। এতে দেখা গেছে, পাকিস্তান দণ্ডবিধির ২৯৫ (ধর্মীয় স্থাপনার পবিত্রতা নষ্ট এবং ক্ষতিসাধন), ২৯৫-এ ও ১০৯ ধারায় এই মামলা করা হয়েছে।

মুহাম্মদ নাইম নামের ফয়সালাবাদের একজন সাধারণ বাসিন্দা এই মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় পিটিআইয়ের নেতা ও তার সহযোগীদের মধ্যে আছেন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী,

সাবেক ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি, শেহবাজ গিল, সাহিবজাদা জাহাঙ্গীর, অনীল মুসাররাতের পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ।

রশিদ আহমেদের ভাতিজা শেখ রশিদ শফিকের নামও মামলার এজাহারে রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, মসজিদে নববীর ঘটনা একেবারে সুপরিকল্পিত এবং ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে করা হয়েছিল। মসজিদে নববীর ঘটনায় ইলেক্ট্রনিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে এর প্রমাণ রয়েছে।

মুহাম্মদ নাইম বলেছেন, ইমরান খান, ফাওয়াদ চৌধুরী, শেখ রশিদ, শাহবাজ গিল এবং কাসিম সুরি মসজিদে নববীর ঘটনার নেপথ্যের হোতা। সৌদি আরবে পিটিআইয়ের কয়েকজন নেতা হেনস্তাকারী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়ে মসজিদে নববীর পবিত্রতা নষ্ট করেছেন।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, ‌‌‘রওজা-ই-রসুলের’ পবিত্রতা যারা নষ্ট করেছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করার পক্ষে কোনো যুক্তি নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী পিটিআইয়ের নেতারা মসজিদে নববীতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের ধর্মীয় কাজে বাধা দিয়েছেন।

এ জন্য পিটিআইয়ের কিছু নেতাকে ব্রিটেন থেকে সৌদি আরবে আনা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। সানাউল্লাহ বলেন, যারা এ ধরনের কাজ করেছেন তাদের জন্য কোনও ক্ষমা নেই।

এদিকে, দেশটির সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদের ভাতিজা অপহৃত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, শেখ রশিদের ভাতিজা শেখ শফিককে বিমানবন্দর থেকে অপহরণ করা হয়েছে। যদিও ইসলামাবাদের বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে এসেছে।

এর আগে, গত শুক্রবার শেহবাজ শরিফ যখন তার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মদিনার মসজিদে নববিতে নামাজ পড়তে যান তখন পাকিস্তানি অনেক হজযাত্রীর তোপের মুখে পড়েন তিনি ও তার দলের সদস্যরা। ওই হজযাত্রীরা শেহবাজ শরিফের উদ্দেশে ‘চোর, চোর’ স্লোগান দেওয়া শুরু করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শেহবাজ শরিফকে ‘চোর’ বলার পাশপাশি প্রতিনিধি দলে থাকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেবের উদ্দেশে অশালীন স্লোগান দিতে থাকেন তারা এবং শাহজাইন বুগতিকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন। অবশ্য তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সক্রিয় তৎপরতার কারণে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।