বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে আলোচনা চান বিএনপির হারুন

mp harun
ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আলোচনা চান বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে।
হারুনের প্রশ্নের পর স্পিকার বলেন, ‘বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনাকালে কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ি অন্য আলোচনার সুযোগ নেই। পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ বিষয়ে কথা বলা যেতে পারে।’
সারাদেশে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিলেও জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে সংসদ অধিবেশনে কেন আলোচনা হবে না এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। সোমবার সংসদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনা অংশ নিয়ে তিনি এই প্রশ্ন তুলেন।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

 

জবাবে হারুন বলেন, কার্যপ্রণালী বিধি যখন প্রস্তুত হয়েছে তখন সিলেটের বন্যা ছিল না।

বৈঠকের শুরুতে বিএনপির হারুন পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে অনির্ধারিত আলোচনায় বলেন, ‘অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, দেশে এখন ভয়াবহ বন্যা। স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যা আজকে সুনামগঞ্জসহ সিলেট বিভাগ পানির নিচে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জায়গায় তীব্র বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই সময়ে সংসদে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।’

এ বিষয়ে তিনি একটি মুলতবি প্রস্তাবের নোটিশ দেওয়ার কথা জানিয়ে হারুন বলেন, ‘কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ি বাজেট আলোচনার সময়ে মূলতবি প্রস্তাব গ্রহণের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই বিধি যখন প্রস্তুত হয়েছে তখন সিলেটে এ ধরণের বন্যা হয় নাই। ১২২ বছরের মধ্যে এই ভয়াবহ বন্যায় মানুষ ওখানে ভয়ানক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। ’

হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা আলোচনা চাই। কিছুদিন আগে সীতাকুণ্ডের যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সেটার ব্যাপারে মন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করা হলেও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। সেখানকার অবস্থা কি এখনও জানা যায়নি। বন্যা পরিস্থিতি যে ভয়াবহ অবনতি হচ্ছে। সেখানে মানুষ যে দুর্ভোগে আছে এই বিষয়গুলো নিয়ে কি হবে না? ’

পরে স্পিকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অতীতে সাধারণ আলোচনায় মাঝে মাঝে জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আলোচনার সুযোগ চাই। যদি আপনি বলে দেন যে সাধারণ আলোচনা ছাড়া কোনো আলোচনা হবে না। তাহলে আপনি নির্ধারণ করে দেন যে আমরা কবে বক্তৃতা দেব সেদিন ছাড়া আমরা আসবো না।’

সংসদের আসন দেখিয়ে হারুন বলেন, ‘সমস্ত চেয়ার খালি। সমস্ত মন্ত্রীদের চেয়ার খালি। বিরোধী দলের সদস্যরা নাই। আজকে কেন থাকছে না? আপনি যদি সংসদের কার্যক্রমে বিরোধী দলের সদস্য, সরকার দলের সদস্যদের অংশগ্রহণ করার সুযোগ না দেন; তাহলে আপনি নির্ধারণ করে দেন যে আমরা কবে বক্তৃতা দিতে আসব। বাদ বাকি দিন আসার কোনো প্রয়োজন নাই।’

পরে বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক সিলেট-সুনামগঞ্জের চলমান বন্যাকে ‘স্মরণকালের বড় বন্যা’ বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি দলীয় এমপি আজকে বন্যা নিয়ে মানবতা দেখানোর চেষ্টা করলেও তাদের দল বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে ১৯৯৫ ও ২০০৪ সালের বন্যায় বন্যা পীড়িত মানুষর পাশে দাঁড়ায়নি। ১৯৯৫ সালের আগস্ট মাসে বন্যায় আমরা ৬১ কেজি ওজনের কেক কাটতে দেখেছি। কিন্তু বন্যা পীড়িতদের কোনো করুণা দেখাতে যাননি। তারা যা করেননি তা আমাদের করতে বলছেন।’

তিনি বলেন, বন্যার শুরু থেকেই নির্বাচনী এলাকায় তিনি ছিলেন। তার নির্বাচনী এলাকাও বন্যা প্লাবিত।

বন্যা মোকাবিলায় সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে সরকার দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে বন্যা পীড়িতদের উদ্ধার ও তাদের আশ্রয় ও খাদ্য দেওয়ার জন্য নির্দেশণা দিয়েছেন। সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করেছেন। তারা সাধ্য অনুযায়ী কাজ করছেন। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন।