পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন ঝিনাইদহের সবজি চাষীরা

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহ। কৃষি নির্ভর এই জেলায় উৎপাদিত হয় সব ধরনের সবজি, ফুল, ফলসহ নানা কৃষিপণ্য। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে পাঠানো হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় লাভবান হয়েছে এ জেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। খুব সহজেই ঢাকাসহ কয়েক জেলায় পৌছাচ্ছে এ জেলার উৎপাদিত কাঁচামাল।

কৃষক তুষার হোসেন জানান, পদ্মা সেতু চালুর আগে এ জেলার উৎপাদিত সবজি, ফুলসহ কৃষিপণ্য ঢাকায় পাঠাতে সময় লাগতো ৮ থেকে ১০ ঘন্টা। ফেরি পারাপারে দেরি হওয়ার কারণে অনেক সময় নষ্ট হতো ফুলসহ কৃষিপণ্য। এতে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি লোকসান গুনতে হতো কৃষকদেরও। পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে পণ্য।

এতে লাভের পাশাপাশি ভালো দাম পাচ্ছে তারা। শুধু কৃষক বা ব্যবসায়ীরাই সুবিধা পাচ্ছে না ভোক্তারাও পাচ্ছে সতেজ টাটকা সবজী। কারন পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনাসহ ওই অঞ্চলের পরিবহন পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে, যানযট মুক্ত হয়েছে দৌলতদিয়া ঘাট। এতে প্রায় সাড়ে ৪ ঘন্টায় সকল ধরনের পরিবহন পৌছাতে পারছে ঢাকায়। যার ফলে যাত্রীবাহি ও পন্য পরিবহনে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না এ জেলার মানুষের। সরকারের এই উন্নয়নকে সাধুবাদ জানিয়ে জেলাকে রেলসেতুর সাথে সংযুক্ত করার দাবী তাদের।শৈলকুপা উপজেলার কুলচারা গ্রামের কলা চাষি আল আমিন মিয়া বলেন, ‘আমি প্রতিবছর ৪ বিঘা জমিতে কলার আবাদ করি। কলা হাটে এনেও বিক্রি করি। আবার ব্যাপারিরাও জমিতে যেয়ে কিনে আনে।

জমি থেকে কিনতে গেলে দাম কম পাই। হাটে এসে বিক্রি করলে তুলনামূলকভাবে দাম বেশি পাই। তবে পদ্মাসেতু চালু হলে আমরা কলার আরও দাম পাব বলে আশা করছি। কারণ পরিবহন ব্যবস্থা ভালো হলে আমরা নিজেরাই যেয়ে বিক্রি করতে পারবো।’ভাটই বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আজিজ উদ্দিন জানান, বাজার থেকে তারা সবজি ক্রয় করে ঢাকার কাওরান বাজার পাঠায়। ঘাটে জ্যাম হলে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। ফলে সবজিসহ কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে লোকসান গুনতে হয় সকল ব্যবসায়ীদের। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দৌলতদিয়া ঘাটে জ্যাম হচ্ছে না ফলে কৃষকরাও তাদের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে সেই সাথে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। আর সব থেকে আশার বানী হচ্ছে ঢাকার মানুষ খেতে পারছে টাটকা ও সতেজ সবজি।

এ ব্যাপারে জেলা মার্কেটিং অফিসার গোলাম মারুফ খাঁন বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় কৃষক ভাইদের ভাগ্য উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। ঝিনাইদহ অঞ্চলের কৃষকরা ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় খুব সহজে সবজি পাঠাতে পারছে। আর আমরা কৃষকদের সবজি বিক্রয়ের জন্য সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগী করে যাচ্ছি।