জাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ৫৫ বছরের বেলায়েত

বয়সের বাধা পেরিয়ে অদম্য ইচ্ছাশক্তির ওপর ভর করে নিজের স্বপ্নপূরণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৫৫ বছর ।
রবিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান ভবনের ২৪৬ নম্বর কক্ষে ‘সি’ ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।

বেলায়েত শেখ দৈনিক করতোয়া পত্রিকার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা।

পরীক্ষা শেষে বেলায়েত শেখ ইত্তেফাককে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তবে সেখানে চান্স হয়নি। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েছি। সেখানে পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে ঢাবি ও রাবি থেকে জাবিতে ভালো পরীক্ষা দিয়েছি।

তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস যতটুকু দেখেছি, বেশ সাজানো গোছানো মনে হয়েছে। পরীক্ষার হলের পরিবেশ সুন্দর ছিল, শিক্ষকরাও সহযোগিতা করেছেন। আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

তিনি আরও বলেন, যদি জাবিতে ভর্তির সুযোগ পাই, তাহলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়তে চাই।

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন বেলায়েত৷ গতকাল শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে বাসে করে রওয়ানা দেন তিনি। এ সময় শ্রীপুর থেকে ভবানীপুরগামী একটি বাসের ধাক্কায় মেরুদণ্ডের নিচের হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা পান তিনি।

এর আগে, গত ১১ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটে পরীক্ষা দেন তিনি। তবে তিনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। পরে গত ২৬ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন বেলায়েত শেখ।

উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালে জন্ম নেয়া বেলায়েত শেখের ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল। প্রবল আগ্রহ থাকলেও দারিদ্র্যের কারণে সুযোগ উঠেনি। ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন বেলায়েত। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে হয় তাকে। ২০১৭ সালে ৫০ বছর বয়সে ভর্তি হন নবম শ্রেণিতে।

এবছর বেলায়েত ঢাকা মহানগর কারিগরি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি-ভোকেশনাল) জিপিএ ৪.৪৩ নিয়ে পাস করেন। এর আগে, ২০১৯ সালে বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে জিপিএ ৪.৫৮ পেয়ে মাধ্যমিক সমমান দাখিল (ভোকেশনাল) পাস করেন।