আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের পরিবর্তে সব (৩০০) আসনে পাঁচটি করে কেন্দ্রে তা বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ প্রস্তাব রাখেন জাফরুল্লাহ।
গতকাল (মঙ্গলবার) কমিশন সভায় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই বিএনপিসহ দেশের বিরোধী দলগুলো ইসির এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করছে। তারা বলছে, ইসি আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ। এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যানসহ তীব্র বিরোধিতা করছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। এ ছাড়া সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইসির এ সিদ্ধান্তকে ভোট চুরির প্রকল্প বলে মনে করছে।
এরমধ্যে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাফরুল্লাহ। সাক্ষাতে কমিশনকে পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎ শেষে সেই তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের জাফরুল্লাহ বলেন, ‘দেড়শ আসনে ইভিএম না করে তিনশটাতে করতে পারে। কিন্তু মাত্র পাঁচটি করে কেন্দ্রে হবে। প্রতি আসনে শ-খানেক কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটিতে ইভিএমে হবে।আমরা যুক্তিতর্ক দিয়ে দেখতে পারি। আমার পরামর্শকে সিইসি যুক্তিসঙ্গত মনে করেছেন। বলেছেন, দেখি- কী করে কী করা যায়।’
কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সিইসির উদ্দেশে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘দেড়শটাতে ইভিএমে করার সিদ্ধান্ত ভুল কাজ হয়েছে। এর ফলে হয়ত নির্বাচনই হবে না।বিএনপিকে আনার চেষ্টা রয়েছে। এই নেগোসিয়েশনের মধ্যে সবাই মনে করে ইভিএম নিয়ে আরেকটা চক্রান্ত। দেড়শটাতে না করে তিনশটাতে হবে; কিন্তু প্রতি আসনে পাঁচটি করে সেন্টারে হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এমন কিছু করা উচিত হবে না যেন অন্যরা ভোটে না আসে।’
আগ বাড়িয়ে কথা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘কমিশন খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে চলছে। সরকারের উচিত হবে যে করেই হোক কিছুটা গিভ অ্যান্ড টেক করে সুষ্ঠু নির্বাচন করা।আজকেও হানিফ (মাহবুবউল আলম) বলেছেন- দেড়শটা নয়, আমরা তিনশটাতে ইভিএম চাই। তাদের উচিত হবে একেবারে চুপ থাকা।এখন ইভিএমের কারণে যদি নির্বাচনটাই বন্ধ হয়ে যায়, বয়কট হয়, তাহলে তা জাতির জন্যে দুর্ভাগ্যজনক হবে।’
নতুন ইসি গঠনে সার্চ কমিটির কাছে সিইসি হিসেবে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম প্রস্তাব করা জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে বিরোধিতার কারণে বিরোধী রাজনৈতিক দল ভোট বয়কট করলে সেই দায় ইসিকে নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা ইসির ঘাড়ে চাপবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। সরকার যেমন দায়ী হবে, ইসিও দায়ী হবে। আমার মনে হয়, ইসি যে এখানে শতভাগ একমত হয়েছেন তা নয়। ওনারা সরকারি চাপে রয়েছেন। ওনারা ভাবছেন।’