বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং নূরে আলম, আ.রহিম, শাওন হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আর এটি দেখে সরকার এখন বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের সমন্বয়ে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। প্রথমে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা করে, পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখে। যদি তারা না পারে তখন পুলিশ তাদের পক্ষ হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে, গুলি করে’।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) আয়োজিত জ্বালানি তেল, সার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি : বিপর্যস্ত কৃষক, কৃষিখাত ও জনজীবন শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘সংকটকালে খাদ্য উৎপাদন অনিবার্য। আজকে মহামারীর কারণে দেশে খাদ্য সংকটের সম্ভাবনা রয়েছে। আসলে বাংলাদেশে বরাবরই দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি বিরাজ করেছে। ক্ষুধা যে কতো ভয়ংকর হতে পারে যে, মা তার সন্তানকে পর্যন্ত বিক্রি করছে। অথচ ক্ষুধা নিয়ে রাজনীতি এবং মানুষের সাথে নির্মম উপহাস করা হচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকার কৃষি উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ৭৮/৭৯ সালে গ্রামীণ উন্নয়নে সেসময় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। সেই থেকে শুরু হলো গ্রামের সমৃদ্ধি। আসলে একজন জনদরদী শাসক হলেই কেবল জনগণের কষ্ট অনুভব করে তাদের জন্য কল্যাণমূলক কাজ করা যায়’।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আজকাল আওয়ামী লীগ নেতারা মিথ্যার কোরাস গাইছেন। বিএনপি মহাসচিব আওয়ামী লীগ আমলের সাথে পাকিস্তানের তুলনা করেছেন এতে তাদের খুব লেগেছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনাদের আমলে তো বাংলাদেশে গুমের কথা জানতে পারলাম। পাকিস্তান আমলেও এই কথা শুনিনি। তো পাকিস্তান আমলের কথা শুনলে আপনাদের এতো লাগে কেন’?
তিনি বলেন, ‘এই সরকার আজীবন ক্ষমতার থাকতে চান বলেই নিজেদের লোককে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেছে। অথচ সেই আইনে বলা ছিলো আরও দুইবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু সেটাও তারা বাতিল করেছে। তাদের যেটাতে সুবিধা হয়েছে সেটি নিয়েছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সারাদেশে জ্বালাও-পোড়াও করলো আবার তারাই বাতিল করল’।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে দেশে দুর্ভিক্ষের অবস্থা বিরাজ করছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজ করছে। সারের সঙ্কট চলছে। জামালপুরে সারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে গিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে’।
এ্যাবের সভাপতি কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুনের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, কৃষিবিদ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল ফারুক, মো. দিদারুল আলম, নূরুন্নবী শ্যামল, আবু হেনা মোস্তাফা কামাল, আশাবুল হক আশা, ড. শফিকুল ইসলাম শফিক, আকিকুল ইসলাম আকিক, শেখ সফি শাওন, সিরাজুন্নবী মামুন, আহসান হাবিব প্রান্ত, কেএম আনিসুজ্জামান, কেআইএফ সবুর, সানোয়ার আলম, কামরুজ্জামান জনি ও শওকত ওসমান শামীম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভুইয়া।