যশোরে কুখ্যাত ডিজিটাল প্রতারক ভুয়া ডা.খন্দকার কবীর ফের আটক

ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে দন্ডিত প্রতারক যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা মল্লিক পাড়ার ননী ফল নার্সারির মালিক সেই ভুয়া ডাক্তার খন্দকার কবীর হোসেন ফের আটক হয়েছে। কুষ্টিয়া সদর থানা পুলিশ একটি প্রতারণা মামলায় শনিবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ৯ টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে। স্থানীয় সাজিয়ালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই সেলিম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।

এস আই সেলিম হোসেন জানান, কুষ্টিয়ার সরকারি একটি দফতরে অফিস সহকারী পদে কর্মরত তানজিল নামে এক ব্যক্তি খন্দকার কবীর হোসেনের ফাঁদে পড়ে চিকিৎসা প্রতারিত হন। গত ১ জানুয়ারি তিনি (তানজিল) খন্দকার কবীর হোসেনের নামে কুষ্টিয়া সদর থানায় প্রতারণার মামলা করেন। যার নম্বর ২৩। কুষ্টিয়া সদর থানার পুলিশ শনিবার রাত ৯ টার দিকে ছাতিয়ানতলা মল্লিকপাড়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কবীর হোসেনকে আটক করে নিয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ননী ফল নার্সারির আড়ালে চিকিৎসার নামে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন খন্দকার কবীর হোসেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের দুর্বলতাকে পূঁজি করে যৌন ও ক্যান্সার চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দিচ্ছিলেন। তার প্রতারণা ও অপকর্ম নিয়ে খন্দকার কবীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। গত বছরের ১৭ মে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতারক কবীরের ডেরায় অভিযান চালায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৌম্য চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ক্যান্সার ও যৌন চিকিৎসায় প্রতারণা ও অবৈধভাবে ওষুধ তৈরির দায়ে খন্দকার কবীর হোসেনকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে। অভিযানে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান ও র‌্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রতারক কবীর জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে এসেই ডিজিটাল প্লাটফর্মে চিকিৎসা প্রতারণা ব্যবসা জোরদার করেন। একাধিক ফেসবুক পেজ খুলে দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক তৈরি করে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে (চিকিৎসা ও ওষুধ পাঠানোর নামে) মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। ৯০ বছরের বৃদ্ধকে যুবক বানানোর ঘোষণা দিয়েও তিনি প্রতারণা করছিলেন। এসব অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ খন্দকার কবীর হোসেনের ডেরায় অভিযান চালায়। এসময় কবীর হোসেন রক্ষা পেলেও তার চার সহযোগীকে আটক করে পুলিশ। পরে এস আই মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বাদী হয়ে কবীর ও তার ৪ সহযোগীর নামে মামলা দায়ের করেন। কিছু দিন গাঁ ঢাকা দিয়ে থাকার পর তিন ফের প্রতারণা ব্যবসা শুরু করেন।

স্থানীয়দের দাবি, ননীফলের নামে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করা খন্দকার কবীর হোসেনকে সর্বোচ্চ সাজা প্রদনের সাথে তার ব্যবসা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হোক। অন্যথায় দেশ-বিদেশের মানুষ ডিজিটালএই প্রতারকের খপ্পরে পড়ে আরও আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।