কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ যাত্রী নিহতের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অনুপস্থিত থাকায় চার্জ গঠনের তারিখ পিছিয়েছেন আদালত।
বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তারিখ পেছানোর আবেদন মঞ্জুর করেন কুমিল্লা আদালতের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় মামলায় হাজিরা দিতে আসেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ।
আদালত থেকে বের হয়ে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, গায়েবি মামলা দিয়ে আওয়ামী লীগ ভোটারবিহীন ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য চেষ্টা করছে। গণতন্ত্র আদায়ের এক দফা আন্দোলনের কণ্ঠস্বর যেন তীব্র না হয় সে জন্য
এ অপকৌশল। তবে এ কৌশলে কোনো কাজ হবে না। মামলা-হামলা দিয়ে কোনো কাজ হবে না। এবার শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতেই হবে এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মিথ্যা মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসনসহ আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতাকে আসামি করা হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এসব মামলায় হাজিরা দিয়ে আসছি। এক তরফা নির্বাচনের জন্য ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ও বিরোধী শক্তিকে দমন করার জন্য দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে হরতাল-অবরোধ চলাকালে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি নৈশ কোচ ৩ ফেব্রুয়ারি ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজারসংলগ্ন জগমোহনপুর এলাকায় পৌঁছালে বাসটিকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোড়ে নাশকতাকারীরা। এ সময় বাসে ঘুমিয়ে থাকা যাত্রীরা আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে সাতজন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আরও একজন মারা যান। এ ঘটনায় পর দিন বিকালে চৌদ্দগ্রাম থানার তৎকালীন এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে নাশকতা ও হত্যার অভিযোগে
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে প্রধান আসামি করে ৫৬ এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতপরিচয় ৭০ থেকে ৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় ৬ নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়। ২০১৭ সালের ২ মার্চ ওই মামলায় ৭৮ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মো. ইব্রাহিম। চার্জশিটে জামায়াত নেতা ও চৌদ্দগ্রামের সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ছাড়াও খালেদা জিয়া, রুহুল কবির রিজভী, মনিরুল হক চৌধুরী ও শওকত মাহমুদসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন।
মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু বলেন, খালেদা জিয়া বর্তমানে আদালতের নির্দেশে সরকারের হেফাজতে আছেন। তাই তাকে উপস্থিত করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা আদালতে আবেদন করেছি, যেহেতু খালেদা জিয়া অসুস্থতাসহ নানা কারণে অনুপস্থিত, এজন্য যেন চার্জ গঠনের তারিখ পেছান হয়। এছাড়া বিএনপির অনেক নেতাকর্মী অনুপস্থিত ছিলেন। আমাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। চার্জ গঠনের তারিখ কবে তা পরে জানা যাবে।