আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি পালিত

যশোরে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ( খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, গেল ৭ জানুয়ারি নির্বাচন নামের নাটক মঞ্চাস্থ হয়েছে। সেদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার গণভবন থেকে পাঠানো ফলফল ঘোষণা করেছেন। আর সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে নৌকাকে ডুবিয়ে ছেড়েছে। সেদিনে আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী সমর্থক ভোটররা ভোট প্রত্যাখ্যান করে ভোটের মাঠে যায়নি।

মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনিএকথা বলেন। এর আগে দিবসটি উপলক্ষে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে যশোর জেলা ছাত্রদল আয়োজনের শিশুদের রচনা ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম।

অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার বক্ত্যের শুরুতে মহান ভাষা আন্দোলনের সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, বর্তমান দেশ ও জাতির এই সংকটময় মুহুর্তে একুশে তাৎপর্য অনেক গুরুত্বপূর্ন। কারণ একুশ আমাদের প্রথম শিখিয়েছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং মাথা নত না করার। একুশ আমাদের শিখিয়েছিল রাষ্ট্র প্রশাসন যন্ত্র যতই শক্তিশালী হোক না কেন, ওই শোষক কিংবা শাসকদের অন্যায্য কোন দাবি মানবার সুযোগ নেই। একুশ সেই প্রতিবাদ করার বিশ্বাসটি আমাদের মাঝে রোপণ করেছে। সেই একুশের চেতনা এবং শিক্ষা বুকে ধারণ করে ৬২ শিক্ষা আন্দোলন এবং ৬৬, ৬৯ এর পথ বেয়ে ৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। আর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, যারা মনে করেন ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রের কোন ভবিষ্যৎ কিংবা আর কোন রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অবারিত সুযোগ নেই। তারা ভূলের স্বর্গে আছেন, কারণ একুশ আমাদের সেই শিক্ষা দিয়ে গেছে যতই বড়ই শক্তিশালী শাসক হোক না কেন, যদি আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ জারি রাখতে পারি তাহলে, কাঙ্খিত ফল অর্জিত হবেই। আজকে ক্ষমতাসীনরা জানে দেশের ১৮ কোটি জনগণ তার গণতান্ত্রিক অধিকার ফেরত চায়। তাই একুশের চেতনায় শানিত হয়ে যে কোন মূল্যে অগতান্ত্রিক শক্তিতে হটিয়ে গণতান্ত্রিক শত্তি প্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড.সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, আবুল হোসেন আজাদ, জেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন, নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মাসুম ও সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।

এর আগে শিশুদের তিন ক্যাটাগরীতের শিশুদের রচনা ও হাতে লেখা প্রতিযোগিতায় ৬২ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় ক-বিভাগে চামেলী প্রথম, জেরিন দ্বিতীয় এবং তাসকিয়া তাহরিম রোশনী তৃতীয় এবং খ- বিভাগে সাওসান আলম বিন্তি প্রথম, জান্নাতুল মাওয়া দ্বিতীয় এবং সাবিহা বিনতে জামান তৃতীয় স্থান অর্জন করে। এছাড়া রচনা প্রতিযোগিতায় মুসফিরাত আলম মেহরিন প্রথম, হুমাইরা জামান নেহা দ্বিতীয় এবং তাসমিয়া তাবাচ্ছুম তৃতীয় স্থান অর্জণ করেন। পরে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রতিযোগিতার বিজয়ীসহ অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য একে শরফুদ্দৌলা ছোটলু, আব্দুস সালাম আজাদ, অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল,নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল সেতু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রাশিদা রহমান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী বেগম, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নেওয়াজ ইমরান প্রমুখ।