নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

যশোরের শার্শা উপজেলাধীন বাগআঁচড়া বাজারে দিনদিন বাড়ছে চাল, ডাল, তেল, ডিম শাকসবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি মানুষের আয় ক্ষমতা। তাই পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এসব লোকজনের। আয়ের সঙ্গে খরচের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের কাটাছিঁড়া করতে হচ্ছে প্রতিদিনের বাজার তালিকা। এভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের মতে, ব্যয় এতই বেড়েছে যে জীবন চালানো দায় হয়ে পড়েছে। বাজার ব্যবস্থার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই উল্লেখ করে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে বলেও ‍অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

গত সপ্তাহে বেগুনের কেজি ছিলো ৫০ টাকা, সেটা বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। তেমনি পটল ৩০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা, শসা ৪০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, কলা ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, রসুন ১৮০ থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০ টাকা, পেঁয়াজ ১১০ থেকে বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। তবে আলুর দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে রয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার বাগআঁচড়া সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি পুজি করে বাজারের কিছু বিক্রেতারা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়েছেন। বৃষ্টি থেমে গেলেও দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে কৃষকের অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে কাঁদা পানি জমে যাওয়ায় সবজি সংগ্রহ করতেও কষ্ট হচ্ছে, এবং অনেক সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তাছাড়া টানা বৃষ্টিতে পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় সবজির দাম বেড়ে গেছে।

বাগআঁচড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা ফজলুর রহমান বলেন, সাধারণত যেসব সবজি ২০ মণ কিনি, সেগুলো এখন কিনছি ৭ মণ। টানা বৃষ্টির কারণে জমিতে কাঁদা-পানি সেজন্য সবজি সংগ্রহ করা যাচ্ছে না।

এদিকে, মুরগির বাজার কিছুটা নিম্নমুখী হলেও স্বস্তির খবর নেই ডিমের বাজারে প্রতিহালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৭০০-৭৩০ টাকা, সাদা লেয়ার ৩৪০-২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা। আর প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা।

চারিদিকে অথৈয় পানি থাকলেও স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারে। বর্ষা মৌসুমী মাছের দাম একটু কম থাকলেও আগের মতোই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৫০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৫০-২০০ টাকা, চাষের শোল ৪০০ টাকা, চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা। এছাড়া আকারভেদে প্রতি কেজি রুইমাছ ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা ও কাতলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার তদারকির দাবী ক্রেতাদের। তারা বলছেন, নিয়মিত বাজার তদারকি করা হলে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পাবে না।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ইয়াসমিন বলেন, যেহেতু বৃষ্টি আর হচ্ছে না, তাই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। যদি কোন ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করেন, তাহলে ঐ সব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।