শার্শায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

একাত্তর শালের পাষন্ড পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকে ও হার মানিয়েছে শার্শার পল্লীতে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সরকারী টিসিবি কার্ড বিতরনকে কেন্দ্র করে উপজেলার কন্দবপুর গ্রামে মুরগীর খামার, তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর লুটপাঠ করে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগি পরিবার। এসময় কুপিয়ে দুইজনকে আহত করেছে। এঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে এবং অজ্ঞাত আরো ৬/৭ জনকে দিয়ে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শনিবার (১২ জানুযারী) রাত সাড়ে ৯ টার সময় শার্শার কন্দবপুর গ্রামে দুবৃত্তরা এ নৃশংষ ঘটনা ঘটায়।

আসামিরা হলো:-কন্দবপুর গ্রামের রেজাউল ওরফে সোনা মিয়ার ছেলে আসাদুল ও তার ভাই তোতা, আক্তারুজ্জামান, একই গ্রামের সিদ্দিক এর ছেলে শাহিন, গোলাম মোক্তাদির ছেলে কবির হোসেন, আক্তার এর ছেলে সম্্রাট, কাদের এর ছেলে আবুজার রবিউলের ছেলে আলম, ঝড়ু মিয়ার ছেলে মোহাম্মাদ ও জুব্বার এর ছেলে হাবিবুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় গ্রামে সরকারী টিসিবি কার্ড বিতরণকে কেন্দ্র করে নিজামপুর ইউনিয়ন এর ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কামারুল ইসলাম ও যুগ্মসাধারন সম্পাদক আশাদুল ইসলামের সাথে তর্ক বিতর্ক এবং ধাক্কা ধাক্কি হয় রবিউলের চায়ের দোকানে। এরপর আসাদুল তার চাচা সুজন মেম্বার এর নির্দেশে দেশীয় অস্ত্র বোমা ও লোক জন এনে প্রথমে হামলা করে রবিউলের দোকানে। এরপর দোকান পুড়িয়ে দিয়ে তারা হামলা চালায় কামারুল ইসলাম ও ঝর্ণা বেগম এর বাড়িতে। তাদের হাতে রড, দা বোমা দেখে বাড়ির পুরুষ মানুষ প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যায়। এরপর দুবৃত্তরা বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে মুরগীর খামার, ধানের গোলা গরুর খাদ্য বিছালী গাদায় আগুন দেয়। তারপর ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে ঘরের টিভি ফ্রিজ, খাট, ওয়ার্ডড্রপ, শোকেচ সহ সকল পণ্য সামগ্রী ভাংচুর করে। এবং লেপ তশক পুড়িয়ে দেয় এবং ঘরে থাকা ২লাখ নগদ টাকা, স্বর্নের ও রৌপ্যের অলংকার লুট করে নিয়ে যায়। তাদের মুরগীর খামারে ৪ শত মুরগী ছিল ।

কন্দবপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন কামারুল ও আশাদুল দুইজনই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) করে। এরা তাদের ওয়ার্ড এর কার্ড বিতরণকে কেন্দ্র করে আমার চায়ের দোকানে হাতাহাতি করে। আমি তাদের দুই গ্রুপকে ঠেকিয়ে দেই। এরপর আসাদুল তার লোকজন এনে আমার দোকান ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে কামারুল এর বাড়িতে যায়।
ভুুক্তভোগি ঝর্ণা বেগম বলেন আমার সাথে কোন দ্বন্দ নেই। তারা রাত্রে কামারুল এর বাড়িতে এসে হামলা চালানোর সময় আমি তাদের নিশেধ করি।এতে তারা উত্তেজিত হয়ে আমার গরুর খাদ্য বিছালী গাদায় অগ্নিসংযোগ করে।

বিউটি খাতুন বলেন আমি ঘরের মধ্যে ছিলাম। আসাদুল আর তার দলবল সহ রাত্রে বাড়িতে এসে আমাদের ঘরে এবং মুরগীর খামার, ধানের গোলায় অগ্নিসংযোগ করে লুটপাঠ করতে থাকে। আমি তাদের বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে বোমা মেরে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি প্রানের ভয়ে পালিয়ে ছাদে উঠে চিৎকার দিলে তারা পালিয়ে যায়।

এ বিষয় নিজামপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড এর সভাপতি কামরুল বলেন, আসাদুল ও তার ভাই তোতা একজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তাদের কাজ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আধিপত্য বিস্তার করা। এর আগে ও তারা এরকম অনেক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটিয়েছে। তোতা পুলিশের চাকরী করত। তার আচারন গত দিক ভালো না থাকায় সে চাকুরী থেকে বরখাস্থ হয়ে বাড়িতে এসে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে। তারা আমার বাড়িতে আগুন দিয়ে এবং লুটপাঠ করে ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। তারা পাশের বাড়ির স্বামী স্ত্রী আজগর ও রিনা ঘটনা দেখতে আসাতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। এ বিষয় ১০ জনকে আসমি করে শার্শা থানায় মামলা হয়েছে।

এ বিষয় আসাদুল এর বাড়িতে গিয়ে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। আসাদুল এর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, আমার স্বামীকে তারা আগে মারধর করায় পরে সুজন মেম্বার এর নির্দেশে ওই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

শার্শা থানার ওসি আমির আব্বাস বলেন, এটি একটি বড় দুর্ঘটনা। আমরা এলাকায় আসামি আটকের ব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি।