যশোরে আদালতে এক কারারক্ষী স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন স্ত্রী। শিশু সন্তান নিয়ে দারে দারে ঘুরেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। উল্টো চার বছরের শিশু সন্তানসহ স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন কারারক্ষী স্বামী। এসব অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট মহলের সহযোগিতা কামনা করেন যশোর সদর উপজেলার চঁাচড়ার বাদশা বিশ্বাসের মেয়ে ফাতেমাতুজ জোহরা। তার স্বামী মোরশেদ আলম গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের ছেলে। বর্তমানে তিনি বকশীবাজার ঢাকা সদর দপ্তরে কর্মরত। তার কারারক্ষী(১৪৮৮৮)
মামলায় বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর তিন লাখ টাকার দেনমোহরে ফাতেমার সাথে মোরশেদের বিয়ে হয়। এ সময় মোরশেদকে মোটরসাইকেল,সোনারগহনা,বাড়ির আসবাবপত্রসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল দেয় ফাতেমার পরিবার। শুধু তাই না,কারারক্ষী পদে যোগদানের জন্য আরও ৬লাখ নেয় দেওয়ান মোর্শেদ আলম। গোপালগঞ্জ মোর্শেদের নিজ বাড়িতে থাকতেন ফাতেমা।
তাদের পুত্রসন্তান ভুমিষ্ট হয়।এরমাঝে মোর্শেদের ভাই সোহেলকে বিদেশে পাঠানোর জন্য একলাখ ও মোর্শেদের ভগ্নিপতি তরিকুল ইসলামকে আরও ৫০ হাজার টাকা দেন ফাতেমার পরিবার। এরপর মোর্শেদ বলে যশোরের চাচড়া থেকে ফাতেমার বাবার নামে জমি বিক্রি করে টাকা আনতে। অথবা১০ লাখ টাকা যৌতুক দিতে বলে মোরশেদ। ওই টাকা না দেয়ায় নির্মম নির্যাতন শুরু করে মোরশেদ। এক পর্যায় ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর মেরে জখম করে সন্তানসহ ফাতেমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় মোরশেদ,তার বোন ও ভাই নাজির আলম বিশ্বাস। এরপর শিশু সন্তান নিয়ে যশোরে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন ফাতেমা। গত চার বছর বিভিন্ন ভাবে মোরশেদকে বোঝানোর চেষ্টা করে ফাতেমার পরিবার। ২০২৪ সালে ২ ডিসেম্বরের মিমাংশার জন্য যশোরে ডাকা হয় মোরশেদকে।
এসময় এসে ফের ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করতে থাকে মোরশেদ। টাকা না দিলে কেন তাকে ডেকে আনা হয়েছে এই বলে বেধড়ক মারপিট করে ফাতেমাকে জখম করে। পরে পরিবারের লোকজন ফাতেমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসা শেষে গত২ জানুয়ারি যশোর নারী ও শিশু নির্যাতনদমন ট্রাইবুন্যাল-১ আদালতে মোরশেদ, তার মা নাজমা বেগম ও ভাই নাজির আলম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেন। একই সাথে মোরশেদের বিরুদ্ধে যৌতুকওপারিবারিক আদালতে আরও দুইটি মামলা করেন। এরপর থেকেই বেপোরোয়া হয়ে যান মোরশেদ। মামলা করায় বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে ছেলে ও সন্ত্রানকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন মোরশেদ। বিষয়টি নিয়ে কারা অধিদপ্তরে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি ফাতেমা। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
ফাতেমা জানান, টুঙ্গিপাড়া বাড়ি হওয়ায় মোরশেদ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গেল চারবছর নানা ভাবে তাকে নির্যার্তন করেছেন। এমনকি এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে পার পেয়েছেন তিনি। ফাতেমা মোর্শেদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।