দেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। একজন ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বজুড়ে তার সুনামের কমতি নেই। কিন্তু দেশের পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি হওয়ার দায়ে তিনি এখন বিপদে আছেন। ছাত্রজনতাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলার আসামি হয়ে তিনি এখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে আছেন। তাকে নিয়ে কথা বলেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।
মেজর হাফিজ রাজনীতিবিদ হলেও তার মূল পরিচয় তিনি একজন তারকা ফুটবলার। স্বাধীনতার পূর্বে পাকিস্তান দলে খেলেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকার ফুটবলে মোহামেডানের জার্সিতে খেলেছেন। ফুটবলার হিসেবে অবসর নেওয়ার পর বাফুফে সভাপতিও হয়েছিলেন।
প্রবীণ এই ক্রীড়াবিদের পরামর্শ নিতে গিয়েছিলেন ।সাকিব আল হাসান। যদিও দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব তা কানে নেননি। শনিবার (৩ মে) জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফিজ এ কথা বলেন।
সাকিবের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাপারে মেজর হাফিজ বলেছেন, ‘সাকিব আমার বাসায় এসেছিল। আলোচনার এক পর্যায়ে তাকে উপদেশ দিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম যা-ই করো, আওয়ামী লীগ করো না। সে উপদেশ না শুনে বিপদে পড়েছে।’
সাকিবকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেই ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় দলে খেলা অবস্থায় রাজনীতিতে যোগদান করা আমার মনঃপুত নয়। আমি তাকে বলেছি তোমার অনেক নাম হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে অলরাউন্ডার হয়ে আছো। এখন রাজনীতিতে যেও না। আর গেলে এই দলটিতে (আওয়ামী লীগ)যেও না। কারণ এই দলটি আর বেশি দিন স্থায়ী নেই। সে আমার কথা শুনে চুপচাপ চলে গেলো।’
মেজর হাফিজ আরও বলেছেন, ‘সে যদি সেদিন আমার কথা শুনতো। রাজনীতিতে না যেতো, তাহলে এখন সে ঢাকার রাজপথে বিচরণ করতো। এখন তো তার বাড়ি আসাই মুশকিল।’
অনুষ্ঠানের তামিম প্রসঙ্গেও কথা বলেন মেজর হাফিজ। তার মতে তামিমকে সময়ের আগেই অবসর নিতে হয়েছে, ‘তাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ঠিক মতো পরিচালনা করতে পারেনি। ফলে সময়ের আগেই কিছু ফরম্যাট থেকে তাকে সরে আসতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে বিভিন্ন ফেডারেশনে এক্সট্রা কাভার (অযাচিত) লোকজন ঢুকে পড়ে।’
বর্তমান প্রজন্মের কাছে মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিনের পরিচয়, তিনি একজন রাজনীতিবিদ। তিনি শুধুই অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ নন, একসময় দেশের অন্যতম তারকা ক্রীড়াবিদও ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্বে পাকিস্তান দলে খেলেছেন। স্বাধীনতার পরও ঢাকার ফুটবলে মোহামেডানের হয়ে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। ফুটবলার হিসেবে অবসর নেয়ার পর বাফুফে সভাপতিও হয়েছিলেন। এএফসি-ফিফার বিভিন্ন কমিটিতেও ছিলেন তিনি।
শারীরিক অসুস্থতার জন্য গত দেড় মাস বাসা ও হাসপাতালের বাইরে বের হননি মেজর হাফিজ। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকের আমন্ত্রণে ক্রীড়াঙ্গনের এক অনুষ্ঠানে আজ হাজির হয়েছিলেন।