এই বিশ্বকাপে বর্ণবাদের চেয়ে বড় সমস্যা ‘সেক্সিজম’: ফিফা

স্পোর্টস ডেস্ক: ফিফার বৈষম্য-বিরোধী বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টারা বলছেন, রাশিয়া বিশ্বকাপে বর্ণবাদের চেয়ে ‘সেক্সিজম’ আরো বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ইংরেজি ‘সেক্সিজম’ শব্দের মাধ্যমে নারীর প্রতি গৎবাঁধা ভুল ধারণা, লিঙ্গভেদ, যৌন হয়রানি ও লিঙ্গ বৈষম্যকে বোঝানো হয়ে থাকে।

ফিফার কাছে ফেয়ার নেটওয়ার্ক নামে ওই বিশেষজ্ঞ দল রাস্তাঘাটে ‘সেক্সিজমে’র ৩০টি দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে। এর মধ্যে রয়েছে সরাসরি সম্প্রচারে থাকা নারী সাংবাদিকদেরকে ভক্তদের যৌন হয়রানির কয়েকটি ঘটনা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।

খবরে বলা হয়, বুধবার বিশ্বকাপ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা বিশ্লেষণ করে ফিফার ডাইভারসিটি প্রোগ্রামের প্রধান ফেডেরিকো আডিয়েছি জানান, তারা চান খেলা সম্প্রচারের সময় স্টেডিয়ামে আকর্ষণীয় নারীদের ছবি কম দেখানো হোক।

আডিয়েছি বলেন, বিভিন্ন দেশের সম্প্রচার স্বত্ব পাওয়া টিভি চ্যানেল ও নিজেদের টিভি প্রযোজনা দলের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলবে ফিফা। সুন্দরী নারীদেরকে সম্প্রচারের সময় বেশি দেখানোর প্রবণতাকেও সেক্সিজম হিসেবে দেখছে বিশেষজ্ঞ দল।

তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগে রাশিয়ায় বর্ণবাদ প্রধান সমস্যা হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। রাশিয়ান ফুটবল ও ইউরোপের ফুটবল সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যা ছিল প্রকট।

ফেয়ার নেটওয়ার্কের পরিচালক পিয়ারা পোয়ার বলেন, ‘যেমনটা আমরা আশঙ্কা করেছিলাম তেমন বড় ধরনের বর্ণবাদী ঘটনা ঘটেনি।’ তিনি এজন্য রাশিয়ান জনগণেরও প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অতিথিদেরকে স্বাগত জানাতে রাশিয়ান জনগণ অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছেন।

বর্ণবাদের বদলে অবশ্য নারী গণমাধ্যম কর্মী ও সাধারণ নারী ভক্তদের যৌন হয়রানির বিষয়টি নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। পোয়ার বলেন, ‘আমাদের কাছে যেসব গুরুতর ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে, সেগুলোর প্রায় অর্ধেকই হলো নারী সাংবাদিকদেরকে সম্প্রচার চলাকালে হয়রানি করা।’ এছাড়া রাশিয়ান নারীদেরকে হয়রানি করার আনুমানিক ১০টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়নি বলে তার ধারণা।

এখন পর্যন্ত সার্বিয়া, রাশিয়া ও পোল্যান্ডের ফুটবল ফেডারেশনকে বিশ্বকাপ চলাকালে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ভক্তদের বর্ণবাদী, জাতীয়তাবাদী ও আপত্তিকর ব্যানারের জন্য জরিমানা করেছে ফিফা। এছাড়া প্রকাশ্যে ভক্তদের মধ্যে সবচেয়ে সহিংস ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় স্টেডিয়ামের ভেতর ক্রোয়েশিয়ার সমর্থকদের ওপর আর্জেন্টিনার সমর্থকদের আক্রমণকে।

এছাড়া ভবিষ্যৎ টুর্নামেন্টগুলোর সম্প্রচার চলাকালে নারীদেরকে আরো শোভনীয়ভাবে তুলে ধরারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফিফা। অবশ্য আডিয়েছি বলেন, ফিফা স্বাভাবিকভাবে বিবর্তিত হতে চায়। তার মতে, ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপের তুলনায় এবারের বিশ্বকাপে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।