আমরা সারাদিন এত পরিমাণ স্মার্টফোনে ব্যস্ত থাকি, যে নিজেদের শরীরে ভয়ঙ্কর রোগ বাঁধাচ্ছি সেদিকে খেয়ালই করছি না। স্মার্টফোন থেকেই ছড়াচ্ছে রোগ। সুযোগ পেলেই দেখে নেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক আপডেট। কখনও ইউটিউবে চোখ, তো কখনও এমনিই ঘেটে চলেছেন স্মার্টফোন।
আজকাল এই ধরণের অভ্যাসে আক্রান্ত সবাই। কিন্তু জানেন কি? এই স্মার্টফোন থেকে ছড়াচ্ছে এমন এক রোগ, যা থেকে মুক্তি পাওয়া, জাস্ট অসম্ভব।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এল এমনই কিছু তথ্য। তথ্য অনুযায়ী, দেশে-বিদেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে আজব রোগ। অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করার ফলে, হাতের আঙুল দিন দিন বেঁকে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রোগের নাম ‘পিঙ্ক’।
ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, আজকাল বেশিরভাগ মানুষের হাতে বড় মাপের মোবাইল-ই বেশি দেখা যায় ৷ তাই অন্য কোথায় ফোন না রেখে হাতের মধ্যেই বেশিরভাগ মানুষ ফোন করেন। আর এর থেকেই বিপত্তি দেখা দিচ্ছে। বেঁকে যাচ্ছে হাতের আঙুল।
ডাক্তারদের কথায়, এই ধরণের রোগ বেশিমাত্রায় দেখা যাচ্ছে নতুন জেনারেশনের মধ্যে। বহু মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ডাক্তার দেখাতে আসছেন। কিন্তু ভয়ের কারণ হল, এর কোনও ওষুধ নেই। মূলত ব্যায়ামই এক্ষেত্রে একমাত্র নিরাময়ের উপায়। আর অবশ্যই ফোন ব্যবহারে রাশ টানার কথাই বলছেন ডাক্তাররা।
এছাড়া সারা দিন মোবাইল ফোনে খুটখুট করা আঙুলের জন্য অনেক ক্ষতি। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ কল্লোল কুমার দের ভাষ্য, মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার আঙুলের স্নায়ুর ওপর চাপ ফেলে, পেশির ক্লান্তি ঘটায়। সারা দিন অনলাইন গেমস বা টেক্সটিংয়ে ব্যস্ত থাকলে একসময় আঙুল অবশ হয়ে যেতে পারে। এমনকি মাত্রাতিরিক্ত হলে অস্ত্রোপচারও করতে হতে পারে।
সারাক্ষণ ফোনের দিকে তাকিয়ে দিন গেলে চোখের সর্বনাশ তো হবেই, সঙ্গে বাড়বে মাইগ্রেনের সমস্যাও। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর ভাষ্য, মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষকে সারাক্ষণ উত্তেজিত করে মোবাইলের ক্ষতিকারক রশ্মি। পেশির ক্লান্তির সঙ্গে যা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের কাজকে ব্যাহত করে ও মাথাব্যথা প্রকোপ আকার ধারণ করে।
দিনের অনেকটা সময় মোবাইল ফোনে পড়ে থাকলে অনিদ্রার প্রকোপে তো পড়বেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, মোবাইলের উজ্জ্বল আলো আর রশ্মি মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করে। বিরাম পায় না সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম। ফলে স্নায়বিক উত্তেজনায় ঘুমের পরিমাণ কমে যায়।