গভর্নরের পদত্যাগ দাবি মওদুদের

রাজনীতি ডেস্ক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে স্বর্ণ চুরির দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হবে।

গভর্নর যদি ওই পদে থাকেন তাহলে সেখানে কোনো রকমের সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভবপর নয়। যার কারণে নিজের সম্মান রক্ষা করার জন্য গভর্নরের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান।

ভল্টে অনিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশে ব্যাংকের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, সরকারের তদন্ত সংস্থাগুলো, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে- স্বর্ণ তামা হয়ে গেছে, স্বর্ণের পরিমাণ কমে গেছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ‘এটা অঙ্কে হেরফের।’ এটা হতে পারে? এটা দেশের মানুষ কখনও গ্রহণ করবে না।

২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ খোয়া যাওয়ার পর তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমানের পদত্যাগের কথাও তুলে ধরেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক হয়ে গেছে স্বর্ণ চোর এবং টাকা চোরের। যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে সব ব্যাংকগুলোকে, সেখানে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে তো এখানে লুটতরাজ হবেই। সমস্ত ব্যাংকগুলোকে আজকে ফোকলা করে দেয়া হয়েছে সরকারি দলের ব্যবসায়ী ও মদদপুষ্ট রাজনীতিবিদদের টাকা দিয়ে, ঋণ দিয়ে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ টেনে মওদুদ আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে অনেক লোকের সমাগমের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে তিনি এবং তার দল অনেক জনপ্রিয়। আর তাই আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী এই জনপ্রিয়তা প্রমাণের জন্য আজকের গণসংবর্ধনা থেকে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।

পাশাপাশি বিএনপিকে একইভাবে সমাবেশ করতে দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি খরচে বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদেরকেও একইভাবে সোহওরায়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে দিতে হবে।

মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকা অবস্থায় আমাদেরকেও জনসভা করতে দেন। আমরা প্রমাণ করব, আপনাদের যে জনসভা হয়েছে তার চাইতে বেশি জনসমাগম হবে বিএনপির সমাবেশে। প্রধানমন্ত্রী নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য আহ্বান জানাবেন। তাহলে আমরা কেন ধানের শীষে ভোট চাইতে পারব না, আমরা কেন জনসভা করতে পারব না?

কোটা সংস্কারের বিষয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, সুপ্রিমকোর্টে এমন কোনো রায় নেই যে এই কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা যাবে না। এ ধরনের কোনো রায় তারা দেখাতে পারবেন না। আমি আহ্বান জানাই আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বা যে কোনো আইনজীবীকে তারা এই রায়টা দেখাক। এই রায়ের অজুহাত দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী সরে এসেছেন। যে ওয়াদা দিয়েছিলেন, যে বক্তব্য তিনি সংসদে রেখেছিলেন, তিনি সেটা থেকে সরে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা এটা প্রত্যাশা করি না। তাকে ভুল বোঝানো হয়েছে।

‘সংঘাতের রাজনীতির পথ সুশাসনের জন্য হুমকি’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট।

সংগঠনটির উপদেষ্টা সালমান ওমর রুবেলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।