এবার বাংলাদেশে গঙ্গার পানি সরবরাহ বন্ধের দাবি বিজেপি নেতার

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ক্ষোভ বাড়ছে, তখন বিজেপি সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে বাংলাদেশকে নিশানা করেছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ, হিন্দিতে লিখেছেন, বাংলাদেশও বড্ড বেশি ছটপট করছে, ওদেরও গঙ্গা নদীর পানি সরবরাহ বন্ধ করার সময় এসেছে।

আমাদের পানি খেয়ে তারা বেঁচে থাকবে, পাকিস্তানের গান গাইবে।
পাশাপাশি রোববার (২৭ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা এএনআই’কে এই বিজেপি সংসদ সদস্য বলেছে, গঙ্গার পানি চুক্তির সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার ভুল করেছিল। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী (নীতীশ কুমার) বরাবর এই কথা বলে আসছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। এমনকি আসামের মুখ্যমন্ত্রী (হিমন্ত বিশ্ব শর্মা) ব্রহ্মপুত্রের পানি বাংলাদেশে যাওয়ার বিরোধিতা করেছেন।

তিনি আরও বলেছেন, সাপের দলকে আমরা কত দিন পানি দেব? এবার থেঁতলে মারার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপর গোটা দেশের মানুষের ভরসা রয়েছে। তাই এই কাজটাও খুব তাড়াতাড়ি হবে।

একই সাথে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নিশিকান্ত। পাকিস্তানের সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সাথে মহম্মদ ইউনূস সরকারের যোগ রয়েছে বলে দাবি করে নিশিকান্ত বলেছেন, লস্কর-ই-তৈয়বা লাগাতার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। তাই জঙ্গি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাথে ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্ত সুরক্ষিত করা প্রয়োজন।

এর আগে শনিবার তিনি একটি ইংরেজি ওয়েবসাইটের একটি খবরের স্ক্রিনশটও শেয়ার করেছেন এবং লিখেছেন, এই পাপীদের জন্য গঙ্গা পানি? যেই প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন, তাতে ইংরাজীতে লেখা রয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্প্রতী দেখা করেছিলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একজন সদস্যের সাথে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবসু ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাথে গঙ্গা পানি চুক্তিতে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর। ২০২৬ সালে এই চুক্তি নবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।

৩০ বছরের সামগ্রিক চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে মে মাস অর্থাৎ শুকনো মৌসুমে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি সরবরাহের কথা উল্লেখ রয়েছে। ওই চুক্তিতে বলা হয়েছে, নদীতে ৭৫ হাজার কিউসেকের বেশি পানি থাকলে ভারত পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি, অবশিষ্ট পানি পাবে বাংলাদেশ। নদীতে ৭০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি, অবশিষ্ট পানি পাবে ভারত। আবার ৭০ হাজার কিউসেক বা তার কম পানি থাকলে তা প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যেই সমান ভাগে ভাগ হবে।