যশোরে পুলিশ ও আ’লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অমিতের লিখিত অভিযোগ

কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ঠ অভিযোগ তুলে ধরে জেলা রিটানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যশোর-৩ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।

সোমবার জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবদুল আওয়ালের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।

লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা ৮৭ যশোর-৩ (সদর)-এর বিভিন্ন ইউনিয়নে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এবং পুলিশ বাহিনীর কতিপয় সদস্য আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের অব্যহত হুমকি-ধামকি প্রদান করছে, এমনকি শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করছে।

তিনি বলেন, ০৫.১২.১৮ ইং তারিখে লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলনের ভাই রিপন সদর উপজেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েতপুর গ্রামের দাউদ হোসেনকে মারপিট করে। গত ০৮.১২.১৮ ইং তারিখে আমি আহত দাউদ হোসেনকে দেখতে তার বাড়ী যাই। ঐ সময় তিনি আমার সাথে দেখা করতে আন্দোলপোতা, দলেন নগর, বলেশ্বর, পরানপুরের নেতাকর্মীরা আসেন। তারা বাড়ী ফিরে গেলে পুনরায় সন্ত্রাসী রিপনসহ আন্দোলপোতা গ্রামের রবিউলগাজী, মিঠু, মেঝবাবু, মোস্তফা, দলেননগর গ্রামের সরোয়ার, রোকন কাঠামারা গ্রামের জাহিদুল, লেবুতলা গ্রামের জহুরুল ও দাউদ খোড়া আমাদের আন্দোলপোতা গ্রামের বিএনপি নেতা ইজ্জত আলীর বাড়ী হামলা করে। অন্যান্য নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে।
ফুলবাড়ী পুলিশ ফাড়ীর এস.আই প্রকাশসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটেছে এবং তারাও বিএনপি কর্মীদের উদ্যেশ্যে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে, নতুবা আটক ও মামলা দেয়ার হুমকি দিয়েছে।

লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষনার পরপরই সাজিয়ালী পুলিশ ফাড়ীর এস.আই সুকুমারসহ অন্যান্যরা বিএনপি নেতা চুড়ামনকাটি বাগডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল মেম্বার ও মিজানুর রহমানকে আটক করে মিথ্যা মামলায় চালান দিয়েছে। চান্দুটিয়া গ্রামের বিএনপি নেতা শফিয়ারের বাড়ীতে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে। পোলতাডাঙ্গা গ্রামের বিএনপি নেতা মিজান মাষ্টারের বাড়ী বার বার অভিযান চালাচ্ছে। তীরেরহাট গ্রামে যুবদল নেতা খলিলুর রহমানের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে ক্রস ফায়ারের হুমকি দিয়েছে।

লিখিত অভিযোগে অনিন্দ্য ইসলাম বলেন, ১০.১২.১৮ ইং তারিখ নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম দিনেই এস.আই তৌহিদ কচুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল, বিএনপি নেতা শহিদ প্রফেসর, মুনসেফপুর গ্রামে কামাল হোসেন, তরিকুল ইসলাম এর বাড়ী বাড়ী গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে এবং কেউ যেন ধানের শীষের পক্ষে কাজ না করে সেই নির্দেশনা দিয়ে থানায় গিয়ে দেখা করতে বলেছে। কচুয়ায় আমাদের কর্মীসভায় পুলিশ হানা দিয়ে ছত্রভংগ করে দিয়েছে।
ইছালী পুলিশ ফাড়ীর এ.এস.আই নাজমুল ও মফিজ পাঁচবাড়ীয়া এসে যুবদল কর্মী মুন্না ও হালিমকে একইভাবে শাষিয়ে এসেছে। এমনকি হালিমের দোকান সন্ধা ৬টার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে এসেছে।

অমিত অভিযোগ করেন, এস.আই খবির রামনগর ইউনিয়নে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক নেতা রাজু ও ছাত্রদল নেতা জিএম বিল্লাল, রাজার হাটের হাসানসহ স্থানীয় নেতা কর্মীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে। এস.আই মিজান নুরপুর গ্রামে বিএনপি নেতা মফিজ এর বাড়ী গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে। এস.আই জসিম দেয়াড়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে বিএনপি নেতা তবিবর এর বাড়ী গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে। এই এস.আই জসিম কিছুদিন পূর্বে কচুয়া ইউনিয়নের ২০ দলীয় জোট নেতা আঃ হান্নানের বাড়ী অভিযানের নামে ভাংচুর করেছে। এমনকি তার বাড়ীর পনির মটর পর্যন্ত খুলে নিয়ে এসেছে। এস.আই এজাজ নওয়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পাঁচবাড়িয়া গ্রামের মশিয়ার রহমান বাবলুকে স্থানীয় আমতলা বাজারে খোজাখুজি করেছে।
এস.আই নূর জেলা ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পির বাড়ী গিয়ে তাকে এবং তার পিতাকে খুজেছে। কাউকে না পেয়ে তার বাড়ীর ছবি তুলে নিয়ে গেছে।
এস.আই সঞ্জয় হৈবতপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মাহাবুবের বাড়ী বারবার যাচ্ছে। ৫০,০০০/- টাকা ঘুষ দাবী করছে। নতুবা মাহবুবের হাটুতে গুলি করার হুমকি দিচ্ছে। একই ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামে সস্ত্রাসী শাহজাহান কসাই স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ী বাড়ী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হানা দিচ্ছে এবং ধানের শীষের পক্ষে কাজ করলে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে।

অমিত অভিযোগ করেন, প্রশাসন ও সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বিএনপির কর্মীদের মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, নির্বাচনে সকলের জন্য সমান সুবিধা-নিশ্চিত করতে সরকার ও প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন পরিবেশ দেখা যাচ্ছে না। এই ধরনের পুলিশী হয়রানি ও আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পূনরাবৃত্তি রোধে তথা একটি সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে তিনি জেলা রিটানিং কর্মকর্তা দায়িত্বশীল ভুমিকা প্রত্যাশা করেছেন।