পক্ষপাত মূলক নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি অমিতের

যশোর-৩ (সদর) আসনে ধানের শীষের সংসদ সদস্য প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ৩০ ডিসেম্বরের পক্ষপাত মূলক নির্বাচন বাতিল করে পুনঃ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার সময় তিনি এ আবেদন করেন। সেখানে তিনি ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, সেনানিবাস এলাকা ব্যাতীত কোন এলাকার ভোটারা ভোট দিতে পারিনি। বাকি কেন্দ্রে গুলোতে পুলিশ প্রশান ও শাসক দলের সন্ত্রাসীরা ৫০ শতাংশ ভোট কেটে নিয়েছে। পেলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি। ভোট কেন্দ্রে নুন্যতম উপস্থিতি’ না থাকলেও জাল ভোট প্রদানের মাধ্যমে ৭৫ শতাংশ ভোটা কাষ্ট দেখিয়েছে। ভোটের আগের রাত থেকে শুরু করে ভোটের দিন গভীর রাত পর্যন্ত শত শত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। আমি যেখানেই গেছি, সেখানেই বোমা মারা হয়েছে। দুই কেন্দ্রে আমার ওপর চড়াও হয়েছে সন্ত্রাসীরা। ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি সরকারি দলের ক্যাডার আর পুলিশি বাধায়। অথচ মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে ছিল। ফলে এ নির্বাচনে জণগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটেনি। জণগন এ নির্বাচন মেনে নেয়নি। তাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনঃ নির্বাচন দাবি করেন তিনি।

এদিকে আজ সোমরার দুপুরে শহরের ঘোপ এলাকায় নিজ বাড়িতে অনুষ্টিত ভোট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অমিত বলেন, ভোটের আগে দিন সন্ধা থেকে শুরু করে পরের দিন যশোর শহরে শত শত বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। ‘আমি আশঙ্কা করছি, বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা এখন আবার হামলা-মামলার মুখে পড়বেন। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমি চিন্তিত। আশা করবো, ভোটারদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টির জন্য সরকারি দলের ক্যাডাররা যে সব বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে, তার দায় বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর চাপানো হবে না।

তিনি বলেন, জনগণের ভালবাসা পাওয়ার জন্য রাজনীতি করি। জনগণ আমার পাশে ছিল। তাদের ভাল বাসা পেয়েছি। এক জন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে এটা আমার বড় অর্জন। আমি জনগণের পাশে ছিলাম, পাশে থাকবো। ধানের শীষের প্রাথী অমিত, গতকাল ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তার সামনে ঘটে যাওয়া ‘ভোটডাকাতির’ কিছু চিত্র তুলে ধরেন।

নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ভোটের আগের রাত থেকে শুরু করে ভোটের দিন গভীর রাত পর্যন্ত শত শত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। আমি যেখানেই গেছি, সেখানেই বোমা মারা হয়েছে। দুই কেন্দ্রে আমার ওপর চড়াও হয়েছে সন্ত্রাসীরা।’

‘শুধু সেনানিবাসের কেন্দ্র্রগুলো ছিল ব্যতিক্রম। এছাড়া আর কোথাও ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি। অথচ মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে ছিল। কোনো কোনো কেন্দ্রে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। তারা ভোট দিতে পারেনি সরকারি দলের ক্যাডার আর পুলিশি বাধায়।
অনেক কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, ব্যালট শেষ। কারণ বেশিরভাগ কেন্দ্রে আগের রাতে ব্যালট কেটে নেওয়া হয়েছে। অনেক প্রিজাইডিং অফিসাররা জিম্মি হয়ে ছিলেন সশস্ত্র ক্যাডারদের হাতে।

তিনি বলেন, এর বাইরেও শত অনিয়ম, জালিয়াতি হয়েছে; যা প্রত্যক্ষ করেছেন সংবাদকর্মীসহ সাধারণ মানুষ।’ ৫ জানুয়ারি ভোটে অংশ না নেওয়া বিএনপি জোট সিন্ধান্ত সে সঠিক ছিল তা আজ জনগণ বুঝতে পেরেছে।

তিনি সংবাদকর্মীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভোটের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত সাতজন সংবাদকর্মী শারীরিকভাবে নিগৃহিত হয়েছেন। তা সত্ত্বেও সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্বে অবিচল ছিলেন। এমনকী সাংবাদিকরা আমার নিরাপত্তা বিধানেও কাজ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখিত যে, বিজয়ী কাজী নাবিল আহমেদকে অভিনন্দন জানাতে পারছি না। কারণ তার জয়ে জনগণের কোনো ভূমিকা নেই। ভূমিকা আছে দলীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশের। জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে এবং সেই নির্বাচনে জয়ী হলে কাজী নাবিলকে অভিনন্দন জানাতাম।’

যশোর-৩ আসনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বয়স ৭২। নিজে নির্বাচনে অংশ গ্রহন ব্যতীত সকল নির্বাচনে তরিকুল ইসলামের প্রধান এজেন্টের দায়িত্ব পালন করেছি। এমন ভোটডাকাতি জীবনে দেখিনি।’ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, আব্দুস সবুর মন্ডল, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নগর সেক্রেটারি মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু প্রমুখ।