ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার দ্রুত বিচারের দাবিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিশাল মানববন্ধন করেছে।
মানববন্ধনে সহমর্মিতা জানিয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, নুসরাত হত্যার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে করে বাংলাদেশে দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করতে হবে। যেন আর কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ভবনের সামনে ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসেন এসব কথা বলেন। মানববন্ধনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে অংশ নেন।
র্যাগিংয়ে বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের নামে অনেক ছাত্র-ছাত্রী হয়রানির শিকার হয়েছে। অনেকে জীবিত থেকেও আজ মৃতের মতো জীবনযাপন করছে। র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে আর কেউ যেন মানসিক পীড়ায় না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নুসরাত হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো: ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, নুসরাত ছিল প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। এ জন্য তাঁকে এমন পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। তবে তাঁর অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় লড়াই থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে, এ রকম পরিণতি আন আর কোনো মেয়ের না হয়।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মানববন্ধনে একাত্মতা জানিয়ে ড. মো: নাজমুল হাসান বলেন, আমরা এ জঘন্য হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি, যাতে বাংলার আপামর জনসাধারণ পুলিশ এবং বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা আনতে পারে।
শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সেলিনা আক্তার বলেন, নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় শুধু পুরুষই ছিল না, দুজন নারীও জড়িত ছিল। অর্থাৎ অপরাধীদের কোনো লিঙ্গ হয় না। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফিকুর রহমান অয়ন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় নারীরা ব্যবসা, চাকরিসহ শিক্ষা-দীক্ষায় অতীতের সব সরকারের চেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছে। ঠিক এ সময়ে এই ধরনের হত্যাকান্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ইতিমধ্যে নেত্রী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এবার আমরা দ্রুততম সময়ের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ প্রকৌশলী ড. মো: আমজাদ হোসেন, শেখ হাসিনা ছাত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়রা আজমিরা এরিন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান, শেখ ফাহাদ ফারদীন প্রমুখ।