যশোরের চৌগাছায় পুকুর ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বে মমিনুর রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আপন তিন খালাতো ভাই। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে লস্কারপুর গ্রামের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মমিন ওই গ্রামের শামসুদ্দিন ওরফে ঈসমাইলের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগ কর্মী বলে জানাগেছে।
চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, গ্রামের একটি পুকুরের মালিক দুই ব্যক্তি। তারা গ্রামে থাকেন না। এদের এক ভাইয়ের কাছ থেকে পুকুর ইজারা নেন ইউনূস ও তার ভাইয়েরা। এরই মধ্যে পুকুরের মালিক আরেক ভাইয়ের কাছ থেকে পুকুরের ইজারা নেন মমিনুর রহমান। সকালে সেই পুকুরে খুঁটিপুতে নেট জাল দিচ্ছিলেন মমিনুর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মমিনুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তার আপন খালাতো ভাই ইউনূস আলী, আলম ও মশিয়ার রহমান। তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিহতের ভাতিজা ও স্ত্রী শেফালী বেগম জানান, সকালে বাড়ির পাশের পুকুরে নেট দিচ্ছিলেন মমিনুর। এসময় একই গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে ইঊনূছ আলী, আলম ও মশিয়ারের নেতৃত্বে আলমের ছেলে তুষার, মশিয়ারের ছেলে সুমন, আলমের শ্যালক আবু বক্করের ছেলে নান্নু, ইঊনূছ-আলমদের ভাগ্নে চুড়ামনকাঠি গ্রামের রাসেল দেশীয় অস্ত্র রাম-দা ও গাছি-দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তারা মমিনুরকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চৌগাছা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সুব্রত কুমার বাগচী বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের শরীরের দুইহাত, বুকে পিঠসহ সমস্ত শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
চৌগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান বলেন, নিহত মমিনুর আওয়ামী লীগের কর্মী। হত্যাকারীদের দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ নিয়ে গত ৮ দিনে যশোরে তিনটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলো। মমিনুর হত্যাকান্ডের আগের দিন বৃহস্পতিবার সকালে (১৩জুন-১৯) যশোর শহরের সন্নাসী দিঘীর পাড়ে মেয়েলি ঘটনায় ফেরদৌস (২০) নামে এক যুবককে প্রতিপক্ষরা ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। তার আগে ঈদের পরের দিন ৬জুন সন্ধ্যায় শহরের রেলগেট এলাকায় পূর্ব শত্রুতার কারণে রেলস্টেশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনির ছাত্র আব্দুল্লাহ খান (১৩) কে প্রতিপক্ষরা ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। যশোরে আইন শৃংখলার অবন্নতি ঘটায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে। আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর দায়িত্ব অবহেলা, ঘুষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অপরাধীরাদের বিচার না হওয়ায় দিনের পর দিন খুন, ধর্ষন, ও রাহাজানির মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সচেত মহল মনে করছেন।