বিশ্বকাপ জিততে ইংল্যান্ডের চাই ২৪২ রান

ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডসে জমজমাট ফাইনালের মধ্য দিয়ে আজ পর্দা নামছে দ্বাদশ ক্রিকেট বিশ্বকাপের। আজই নির্ধারিত হয়ে যাবে চলতি আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের শ্রেষ্ঠ দল। মহাযজ্ঞের ফাইনালে ঐতিহাসিক ভেন্যুতে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি দুই দলের সামনেই। কিন্তু প্রথমবার বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরার মিশনে আগে ব্যাট করতে নেমে অতটা সফল নয় নিউজিল্যান্ড। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় নির্ধারিত ওভারে মাত্র ২৪১ রানে থামে কেন উইলিয়ামসনের দল।

রোববার ইংল্যান্ডের স্থানীয় সময় ভোরে বৃষ্টির কারণে মাঠের আউটফিল্ড ভেজা থাকায় নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পর খেলা শুরু হয়। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়াম সন। কিন্তু টস জিতে আগে চাপমুক্ত ব্যাট করার ফায়দা তুলতে পারেননি কিউই ব্যাটসম্যানরা।

ইনিংসের শুরুতেই পরপর দুইবার কিউই ব্যাটসম্যানদের এলবির ফাঁদে ফেলতে জোরালো দাবি তোলেন ইংলিশ বোলাররা। দুইবারই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যায় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু সপ্তম ওভারে আর রক্ষা হলো না। দলকে চাপে ফেলে ১৯ রানে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার গাপটিল। বরাবরের মতো শিরোপা ছোঁয়ার মঞ্চেও ব্যর্থতার ছায়া হয়ে থাকলেন নিউজিল্যান্ড কিউই এই ওপেনার।

শুরুতেই বিপদে পড়া নিউজিল্যান্ডের হাল ধরেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। প্রতিটি ম্যাচেই দলকে টেনে নিয়েছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন আসরজুড়ে। বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্বও করেছেন। সঙ্গে দলের বাকিদের সহায়তা। কিন্তু আসরজুড়ে আলো ছড়ানো অধিনায়ক শিরোপা মঞ্চে পারলেন না দায়িত্ব নিতে। ২৩তম ওভারে এলবির ফাঁদে ফেলে কিউই অধিনায়ককে বিদায় করেন প্লাঙ্ককিট। ফেরার আগে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান।

দুই উইকেটে হারানো পর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওপেনার হেনরি নিকোলস। তুলে নেন ক্যারিয়ারের নবম হাফসেঞ্চুরি। কিন্তু হাফ-সেঞ্চুরির পর টিকলেন না তিনিও। ফিরেন ৫৫ রানে। তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ফেরার পর বেশ চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরাও ব্যর্থ হন দলের হাল ধরতে। ব্যাটসম্যানদের আশা-যাওয়ার মিছিলে টম লাথাম করেন ৪৭ রান। এছাড়া বাকি ছয় ব্যাটসম্যান ২০’এর ঘরও পার করতে পারেননি। ইংলিশদের গতির কাছে রান তুলতেও হিমশিম খেতে হয় ব্যাটসম্যানদের। যার কারণে নির্ধারিত ওভারে ২৪১ রানের বেশি তুলতে পারেনি নিউজিরল্যান্ড।

ইংল্যান্ডের হয়ে বল হাতে সমান তিনটি করে উইকেট নেনে ক্রিস ওয়াকস এবং প্লাংঙ্কিট। একটি করে নেন আদিল রশিদ এবং জোফরা আর্চার।

মহারণে নামার আগে দুই দলের যাত্রা প্রায় একই রকম ছিল। হট ফেভারিট তকমা নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা ইংল্যান্ড শ্রীলঙ্কার কাছে পরাজয়ের পর সেমিফাইনালে ওঠা নিয়েই শঙ্কায় পড়েছিল। লিগ পর্বে শেষ দুই ম্যাচ জিতে সেমিতে পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়াকে শোচনীয়ভাবে হারায় তারা।

অন্যদিকে, প্রথম ছয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জয় নিয়েও শেষের দিকে টানা কয়েকটি হারে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডেরও। তবে নেট রানরেটের হিসাবে সেমিফাইনালে ওঠা কিউইরা আরেক হট ফেভারিট ভারতকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে।

মুখোমুখি ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড : দুই দলের মধ্যে মোট ৯০টি ওডিআই ম্যাচ হয়েছে। তাতে নিউজিল্যান্ড ৪৩ ও ইংল্যান্ড ৪১ বার জয় পেয়েছে। আর বাকি ছয় ম্যাচের মধ্যে চারটি পরিত্যক্ত ও দুবার টাই হয়েছে।

বিশ্বকাপযাত্রায় আটবার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে তারা। তাতে নিউজিল্যান্ড পাঁচটিতে ও ইংল্যান্ড তিনটিতে জয় পায়।

চলতি বিশ্বকাপে মুখোমুখি অবস্থান : গত ৩ জুলাই চলতি বিশ্বকাপে লিগ পর্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৯ রানের বড় জয় পায় ইংল্যান্ড। ইংলিশদের ৩০৫ রানের জবাবে ৪৫ ওভারে ১৮৬ রান তুলতেই অলআউট হয়ে যান ব্ল্যকক্যাপরা। ১০৬ রান করা বেয়ারস্টো পান ম্যাচসেরার পুরস্কার।