যশোরে বালু ব্যবসায়ী মামুন শেখকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো অভিযোগ

মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বালু ব্যবসায়ী শহরতলীর আরবপুরের মামুন শেখকে ২৮ পিচ ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামুন আরবপুর রেললাইন এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে।

এর আগে কোতয়ালি থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই আমিরুজ্জামান ও এস আই ইকবাল বালু নেয়ার কথা বলে মামুনকে মোবাইল ফোনে আরবপুর মোড়ে ডেকে এনে কোতয়ালি থানার একটি মাইক্রোবাসে করে চানপাড়া ফাঁড়িতে নিয়ে আটকে রাখে।

আটক মামুন জানান, আরবপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামি বাবু ওরফে দাঁতাল বাবুর সাথে মামুনের স্থানীয় বিভিন্ন বিষয নিয়ে বিরোধ রয়েছে। আরবপুর এলাকায় দাতাল বাবুর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় মামুনের সাথে দাঁতাল বাবুর বিরোধের সৃষ্টি হয়। দাঁতাল বাবু, মামুনকে শায়েস্তা করতে বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী ও পুলিশকে টাকা দেয় বলে দাবি করে মামুন। এরই ধারা বাহিকতায় দাঁতাল বাবু কোতয়ালি থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই আমিরুজ্জামানকে অর্ধলাখ টাকা দেয় মামুনকে শায়েস্তা করতে। এ টাকা পেয়ে এস আই আমিরুজ্জামান বুধবার (১৭ জুলাই) ভোর আনুমানিক ৬ টার দিকে একটি সাদা মাইক্রোবাস নিয়ে আরবপুর মোড়ে যেয়ে ক্রেতা সেজে ৩ শ সেপ্টি বালু নেওয়ার কথা বলে মামুনকে আরবপুর মোড়ে আসতে বলে। এস আই আমিরুজ্জামানের সাথে ছিলেন কোতয়ালি থানার এস আই ইকবাল, এস আই মেসবাহ, ও এ এস আই বিপ্লব। ক্রেতার ফোন পেয়ে মামুন সকালে আরবপুর মোড়ে গেলে ওই চার দারোগা মামুনকে আটক করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় এলাকাবাসি ও ব্যবসায়ীরা অনেকেই বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন। কিন্তু পুলিশ ও দাঁতাল বাবুর ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। মামুনকে মাইক্রোবাসে করে এস আই আমিরুজ্জামান, এস আই মেসবাহ, এস আই ইকবাল ও এ এস আই বিপ্লব নিয়ে যায় চানপাড়া ফাঁড়িতে। সেখানে নিয়ে মামুনকে আটকে রাখে।

এদিকে সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর মামুনের কোন খোজ না পাওয়ায় বড় ভাই জাহাঙ্গীর কোতয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। জিডির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় এস আই শামিমকে। অন্যদিকে মামুনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে নড়ে চড়ে বসে ওই চার দারোগা। অবস্থা বেগতিক দেখে বুধবার বিকেলে মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীরকে মোবাইল করে এস আই ইকবাল। তিনি মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীরকে বলেন, ৩০ হাজার টাকা দিলে মামুনকে ছেড়ে দেয়া হবে। জাহাঙ্গীর টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। অবশ্য ঘটনাটি কোতয়ালি থানার ওসি সমীর কুমার সরকার জানলেও বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। মামুনের নিখোজের বিষয়টি নিয়ে যখন মামুনের পরিবাসহ সবাই সরব তখন রাত ১২ টার দিকে মামুনকে কোতয়ালি থানায় হাজির করা হয়। পুলিশ নিজেদের দোষ এড়াতে ২৮ পিচ ইয়াবা দিয়ে এ এস আই ফুরকান বাদি হয়ে মামলা করেন।

মামলায় উল্লেখ করেছেন, পালবাড়ি ভাস্কর্যের মোড়ে এক মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করছে। খেবর পেয়ে সেখানে গেলে পালানোর চেষ্টা করে। সংগীয় ফোর্সের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়। এস আই ইকবালসহ স্থানীয় জনতার সামনে জিজ্ঞাসাবাদে মামুন তার কাছে ইয়াবাট্যাবলেট আছে বলে স্বীকার করে। তার প্যান্টের পকেট থেকে ২৮ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট বের করে দেয়।

এব্যাপারে সেকেন্ড অফিসার আমিরুজ্জামনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ঘটনার সাথে আমি জড়িত না। এস আই ইকবাল, এস আই মেসবাহ ও এ এস আই বিপ্লব মামুনকে সকালে বাড়ি ডেকে ধরে নিয়ে চানপাড়া ফাড়িতে আটকিয়ে রাখে।