যশোরে মৎস্যঘের ব্যবসায়ী ইমামুল ইসলাম ওরফে ইমরোজ হত্যাকান্ডের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। নিহত ইমামুলের পিতা নুর ইসলাম বাদি হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়।
এছাড়াও অস্ত্র উদ্ধার ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় আরো দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার মামলায় আসামি একজন ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়। ৫ জনকে পুলিশ আটক করে।
মামলার বাদি ভাতুড়িয়া নারায়নপুর গ্রামের মৃত ইসলাম আলী মোড়লের ছেলে নুর ইসলাম জানান, ইমামুল ইসলাম ওরফে ইমরোজ হত্যাকান্ডের দিন বুধবার রাতে তিনি পান্নুকে প্রধান আসামি করে কোতয়ালি থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৪/৫ জনকে আজ্ঞাত আসামি করে লিখিত এজাহার দিয়েছেন। পুলিশ বৃহস্পতিবার এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে বলে থানা সূত্রে জানা যায়।
মামলার আসামিরা হচ্ছে চাঁচড়া দাড়িপাড়ার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সেলিম রেজা পান্নু, ভুড়িয়ার কাজলের ছেলে মোস্তফা ওরফে মোস্ত, চাঁচড়া মধ্য পাড়ার ভোগোর ছেলে স্বাধীন, চাঁচড়া ডালমিল এলাকার আজিজুলের ছেলে রিংকু, চাঁচড়া চেকপোষ্ট এলাকার তৌহিদুলে ছেলে আকিদুল, বাহাদুরপর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আলী, ভাতুড়িয়া দাড়িপাড়ার শাহজাহানের ছেলে আব্দুর রহিম, চাঁচড়া গাজিপাড়া কানা খোকনের ছেলে শাহিন, বাবুর ছেলে রনি, ভাতুড়িয়া নারায়ণপুরের এনামুল সরদারের ছেলে নাজমুল, ভাতুড়িয়া পশ্চিমপাড়ার রাজা মিয়ার ছেলে তানভীর, ঝাউদিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে সজল ও ভাতুড়িয়া দাড়িপাড়ার ছেলে ইয়াসিন বিশ্বাসের ছেলে আবু হেনা মোস্তফা কামাল সাগর। এই ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাদি নুরইসলাম বলেছেন, এজাহারে উল্লেখ করেছেন, যশোরের মনিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে আলাউদ্দিন (২৯) ও যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকার জসিম উদ্দিনের মেয়ে সিনথিয়া আক্তার টুকটুকি ২৪ জুলাই বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি প্রাইভেটকারে করে তার ভাতুড়িয়া হরিণার বিলের মৎস্য ঘেরে আসেন। এ সময় তার ছোট ছেলে ইসরাজুল ইসলাম তারা ঘেরে কেন এসেছেন তা জানতে চান। জবাবে যুবক-যুবতী জানান যে, তারা বিবাহিত। ঘেরে তারা বেড়াতে এসেছেন। এ নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতিও হয়। এসময় ইসরাজুল ইসলাম তার বড় ছেলে ইমরোজ হোসেনকে খবর দিলে তিনি ঘেরে ছুটে যান। এরপর দুপুর পৌনে একটার দিকে ওই ঘেরে যায় আসামি আলী, রিংকু, স্বাধীন, শাহিন, রহিম ও রনি। তারা আলাউদ্দিন ও সিনথিয়া আক্তার টুকটুকিকে আসামি সেলিম রেজা পান্নুর অফিসে নিয়ে যেতে চাইলে তার দুই ছেলে এতে বাধা দেন। ফলে গোলাযোগ বাধলে দু পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ সময় উল্লিখিতরা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। পরে আসামি সেলিম রেজা পান্নুর নির্দেশে দুপুর দেড়টার দিকে ৯ জন আসামি তিনটি মোটরসাইকেলে তার মৎস্য ঘেরের সামনে যান। সেখানে আগে থেকে আরও দু জন আসামি অবস্থান করছিলেন। এদের মধ্যে আসামি রনি তার ছেলেকে ছুরিকাঘাত ও আসামি আকিদুল আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বুকে গুলি করেন।
পুলিশ এই হত্যাকান্ডের ব্যাপারে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এদিকে পান্নুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র গুলি ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় আরো দুটি র্পথক মামলা হয়েছে। অস্ত্র গুলি উদ্ধারের ঘটনায় পান্নুকে ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনকে আটক করা হয়।