সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার করতে গিয়ে যশোর কোতয়ালি পুলিশের এক সদস্য ছুরিকাহত হয়েছে। এসময় তার সাথে থাকা চৌকিদারকেও মারপিট করা হয়েছে। তাদেরকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানায় দুটি মামলা হয়েছে।
ছুরিকাহতরা হলেন, যশোর কোতয়ালি থানার এএসআই লিটন ও মারপিটের শিকার চৌকিদার যশোর সদর উপজেলার রামনগর এলাকার মোতালেব গাজীর ছেলে জয়নাল।
পুলিশ জানায়, এএসআই লিটন ও জয়নাল রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি কালামানিককে গ্রেফতার করার জন্য যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট মেইন রোডে রাসেল স্টোরের সামনে যান। এসময় সাজাপ্রাপ্ত আসামি কালামানিককে ধরতে গেলে হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে প্রথমে এ এস আই লিটনের বাম হাতে ছুরিকাঘাত করে। চৌকিদার জয়নাল এগিয়ে গেলে তাকে মারপিট করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহদেরকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক কল্লোল কুমার সাহা দুই যুবক ভর্তি হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, একজনের হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তবে অবস্থা আশংকামুক্ত।
খবর পেয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী ও কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মনিরুজ্জামান হাসপাতালে যান। তারা এএসআই লিটন ও চৌকিদার জয়নালের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন।
স্থানীয়রা জানান, এএসআই লিটন প্রায় পুলেরহাট এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মাসোহারা আনতে যায়। সম্প্রতি ওই এলাকার এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। রোববার রাতে লিটন পুলেরহাট এলাকায় গেলে তার ওপর হামলা চালানো হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপাতে গেলে লিটন বাম হাত দিয়ে ঠেকায়। ছুরিকাঘাতে তার হাত রক্তাক্ত জখম হয়। এসময় চৌকিদার জয়নাল এগিয়ে গেলে তাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কিছুই না বলে প্রচার করে। পরবর্তীতে ছুরিকাঘাতের কথা স্বীকার করেছে।
যশোর কোতয়ালি থানার ওসি (অপারেশন) সেখ তাসমীম আহম্মেদ জানান, সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার করতে গেলে তার হাতে ছুরি ছিল। সেই ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে। যার ফলে লিটনের হাত কেটে গেছে।
পুলিশের একটি সুত্র জানায়, কালামানিক শহরের গাড়ি খানা এলাকার বাসিন্দা। ছাত্রদল নেতা পলাশ হত্যা মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। এরপর থেকে সে শহরতলীর পুলেরহাট এলাকায় বসবাস করে আসছে। পলাশ হত্যা ছাড়াও কালামানিকের বিরুদ্ধে আরো প্রায় ডজন খানেক মামলা রয়েছে।
কোতয়ালী থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন তাসমীম আহমেদ জানান, এ এসআই লিটনের ওপর হামলার ঘটনায় কোতয়ালী থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি পুলিশ আহত করার অপরাধ। অপরটি অস্ত্র আইনে। তিনি জানান, রাতে হামলাকারি কালোমানিকেকে আটক করে পুলিশ। তাকে সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।