যশোরে প্রতিবন্ধী খুনের ঘটনায় থানায় মামলা, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার

যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের আগরাইল গ্রামে সৎ বাবার ছুরিকাঘাতে শারীরিক প্রতিবন্ধী তরুণী সুমী (২৫) হত্যাকান্ডের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। নিহত প্রতিবন্দি সুমির মা আগ্রাইল পূর্বপাড়ার মোজাহার বিশ্বাসের মেয়ে রেশমা খাতুন মামলা করেন। মামলায় বাঘারপাড়া উপজেলার ভদ্রডাঙ্গা কারিগর পাড়ার মৃত কুবাদ আলী চৌধুরির ছেলে নিহতের সৎ বাবা রিকশা চালক নাজমুল আহসানকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নং-৮৪। তারিখঃ ২৯.০৮.১৯। ধারা-৩০২ পেনাল কোড।

মামলায় রেশমা খাতুন উল্লেখ করেছেন, প্রতিবন্ধী সুমি আমার আগের স্বামীর মেয়ে। বর্তমান সংসারে তিন ছেলে দুই মেয়েকে নিয়ে আমার বড় বোন শিউলি খাতুন তার দ্বিতীয় স্বামী রেজাউল ইসলাম ও আমার মা, বাবাকে নিয়ে আগ্রাইল গ্রামে থাকে। আমি প্রতিবন্দি মেয়ে সুমি ও বর্তমান স্বামী আসামি নাজমুলকে নিয়ে ঢাকার কামরাঙ্গীর চর থানার কুরার ঘাট এলাকার আজিজিয়া মসজিদের পাশে আব্দুল লতিফের টিন সেডে বাড়া থাকি। আমার স্বামী নাজমুল রিকশা চালায়। আমি প্রতিবন্দি মেয়ে সুমিকে নিয়ে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করি। ভিক্ষা করে উর্পাজিত টাকা বিভিন্ন সময় স্বামী নাজমুলকে দিই। গত ৮ আগস্ট ঈদ উপলক্ষে আমরা ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি আগ্রাইলে আসি। গত ১৪ আগস্ট আমার দ্বিতীয় ঘরের প্রথম মেয়ে সাথিকে ঝিনাইদহে বিয়ে দিই। বিবাহ অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা আমি বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ধার নিই। ২৮ আগস্ট স্বামী নাজমুলকে ধারের টাকা পরিশোধের জন্য ২০ হাজার টাকা দিতে বলি। কিন্তু নাজমুল আমার কথায় কর্নপাত না করে ঝগড়া বিবাদ করে বলে আমি কোন টাকা দিতে পারবো না। এদিন বিকাল আনুমানিক বিকাল ৪ টার দিকে নাজমুল দুপুরের খাবার খেয়ে আমার দুলাভাই রেজাউল ইসলামের সাথে বাড়ি থেকে বের হয়ে খাজুরা বাজারে যাওয়ার পথে বীজঘাটায় খেলাফতের চায়ের দোকানে চা পান করে। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে দুলাভাই রেজাউল বাড়িতে ফিরলেও নাজমুল বাড়ি ফেরে না। বাড়ির সবাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আমার মা সাফিয়া বেগম সুমিকে নিয়ে বারান্দার দক্ষিন পাশে খাটের উপর ঘুমিয়ে পড়ে। রাত অনুমান সোয়া ২ টায় নাজমুল বাড়ি এসে বারান্দায় খাটের উপর ঘুমন্ত মেয়ে সুমিকে বাম পাজরে, ডান পাজরে, নাভির নীচে ও পেটে ছুরিকাঘাতে রক্তাত্ত জখম করে। সুমির চিৎকারে বাড়ির সবাই এগিয়ে গেলে নাজমুল পালিয়ে যায়। সুমির পেটের নাড়ি ভুড়ি বের হয়ে যায়। বারান্দায় মাটিতে রক্ত মাখা ছুরি পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় রাত সাড়ে ৩ টায় আহত সুমিকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের ডাক্তার এম আব্দুর রশিদ জানান, ছুরিকাঘাতের ফলে মেয়েটির প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। রাতে তাকে চিকিৎসা দিয়ে ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে সুমি মারা যায়। ঘটনার পর ঘাতক নাজমুল পালিয়ে যায়। পুলিশ রক্ত মাখা ছুরি উদ্ধার করে।