এনআরসি ইস্যুতে কেউ যেন রাষ্ট্রহীন না হয়: জাতিসংঘ

আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তালিকা থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখ মানুষ যেন রাষ্ট্রহীন হয়ে না পরে, তা নিশ্চিত করতে ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘরে শরণার্থী বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ফিলিপো গ্রান্ডি।

জেনেভা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আসামের এনআরসির ঘটনায় উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছেন ফিলিপো গ্রান্ডি।

গত শনিবার ভারতের আসাম রাজ্যে প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা। এই তালিকা প্রকাশের পর ১৯ লক্ষের বেশি মানুষ ‘রাষ্ট্রহীন’ হয়ে পড়েছেন। এরা সবাই বাংলাভাষী। ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের অভিযোগ, নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসেছেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

ফিলিপো গ্রান্ডি বলেন,‘যে কোনও প্রক্রিয়া, যাতে অনেক মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়ে যেতে পারে, সেই প্রক্রিয়াই জাতিসংঘ বিশ^কে উদ্বাস্তশূন্য করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করবে।’

এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়াদের আইনি দিক মোকাবেলার জন্য শীঘ্রই আরো এক হাজার ট্রাইব্যুনাল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে ট্রাইবুন্যালের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

গুয়াহাটি হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও নাগরিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা হাফিজ রশিদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ট্রাইব্যুনাল কিভাবে কাজ করে, সেটা নিয়ে বিভিন্ন আইনজীবীর কাছ থেকে তিনি নানা অভিযোগের কথা শুনেছেন।

‘তার মধ্যে একটি হল ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীদের থেকে ইচ্ছামত সাক্ষ্য আদায় করা। ট্রাইব্যুনালে গেলে সাক্ষীদের ধমক দেয়া হয় যে এই তুমি এটা বল কেন, ওইটা বল। গরিব মানুষ ধমকি খেয়ে ঘাবড়ে যায়। ট্রাইব্যুনালের কথামত দিয়ে দেয় স্টেটমেন্ট। এ রকম শত শত কেইস আমাদের কাছে রিপোর্ট করছে কিলরা। জুনিয়র উকিলরাও কিছু বলতে পারেন না।’

এরকম অবস্থায় তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষগুলো কতোটা ন্যায়বিচার পাবে সেটা নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। রশিদ চৌধুরী মনে করেন, এই মানুষগুলো শেষ পর্যন্ত কীভাবে থাকবে সেটা একমাত্র সরকারের ওপর নির্ভর করবে।

বাদ পড়া ১৯ লাখ মানুষকে আইনি সহায়তা নিশ্চিতের জন্য ভারত সরকারের আহ্বান জানান গ্রান্ডি। তিনি বলেন, ভারত সরকারকে আসামের প্রত্যেক নাগরিকের তথ্যের অধিকার, আইনি সহায়তাসহ যেকোন ধরণের আইনি সহায়তা লাভের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’