দ্বিতীয় দফা বহিরাগত করোনা সংক্রমণের সম্মুখীন এশীয় দেশগুলো

দ্বিতীয় দফায় বহিরাগত করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সম্মুখীন এশীয় দেশগুলো। বাইরে থেকে আগত মানুষরা ভাইরাসটি নিয়ে এশীয় দেশগুলোতে প্রবেশ করছে। দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও চীনে এমন সংক্রমণ পরিলক্ষিত করা গেছে।

ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীন বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো জানিয়েছে, সেখানে স্থানীয়ভাবে কোনো সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। চীনের জন্য এ ঘটনাকে বড় ধরনের মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ভাইরাসটির প্রাণকেন্দ্র ছিল চীন। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি। মারা গেছেন ৩ হাজারের বেশি।

এদিকে, স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ না হলেও অন্যান্য দেশ থেকে ফেরত আসা মানুষদের মধ্যে ৩৪ জন আক্রান্ত বলে জানিয়েছে চীন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে বলা হয়, চীনের পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে নতুন ৪৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ জনই অন্যান্য দেশ থেকে সিঙ্গাপুর ফেরত গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়ও। সেখানে বৃহস্পতিবার ১৫২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এর মধ্যে কতজন অন্যান্য দেশ থেকে ফিরেছেন তা জানা যায়নি।

এদিকে, বুধবার জাপানে নতুন তিন জন আক্রান্ত ধরা পড়েছে। তবে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে অনেকটা। দেশটির হোক্কাইদো শহর থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে জরুরি অবস্থা। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে সেখানে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার হলেও জনগণকে সতর্ক ও বাড়িতে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

বুধবার এক বিবৃতিতে হোক্কাইদোর গভর্নর নাওমিচি সুজুকি বলেন, মানুষজনকে বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত রাখতে আমরা জোরদার পদক্ষেপ নিয়েছি। কিন্তু এখন থেকে আমরা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে কাজ করবো। সামাজিক দূরত্ব ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বজায় রাখবো।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, দেশটিতে স্থানীয়ভাবে কোনো সংক্রমণ ঘটেনি। এমনকি ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল উহানেও কোনো সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। তবে বিদেশ থেকে ফেরত যাওয়া ৩৪ জন নাগরিকের মধ্যে ভাইরাসটির উপস্থিতি সনাক্ত করা গেছে।
এশীয় দেশগুলোর মধ্যে উপরোল্লিখিত চারটি দেশই ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সফলতা প্রদর্শন করেছে। তবে অঞ্চলটির অন্যান্য দেশে ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি তাদের সফলতাকে ঢেকে দিতে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে মালয়েশিয়ায়। দেশটিতে বুধবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৭১০ জন। পুরো দেশে আংশিকভাবে জারি করা হয়েছে লকডাউন।

ভাইরাসটির প্রাণকেন্দ্র এশিয়া থেকে ইউরোপে সরে গেছে। পুরো বিশ্বের নজর এখন সেদিকে। বৃহস্পতিবার ইতালি সরকার জানিয়েছে, সেখানে একদিনে মারা গেছেন ৪৭৫ জন। স্পেনে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬০০ জনে পৌঁছেছে। ফ্রান্স ও বৃটেনে মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ২৬৪ জন ও ১০৪ জন। বৃটিশ সরকার দেশজুড়ে স্কুল বন্ধ ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ রাজ্যেই ছড়িয় পড়েছে করোনা ভাইরাস। আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৩১৩ জন। মারা গেছেন ১৪৭ জন।