যশেরে কলেজ ছাত্রকে অপহরনের পর মুক্তিপন আদায়ের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।
নড়াইলের লোহাগাড়া থানার লাহুড়িয়া গ্রামের মৃত সৈয়দ মানু আলীর ছেলে বর্তমানে শহরতলীর হামিদপুর বাজারের পার্শ্বে আকবর আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া সৈয়দ শামীমুজ্জামান (২৫) বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার ১৯ মার্চ গভীর রাতে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।
মামলায় ৮জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো ২/৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার আসামিরা হচ্ছে, আরবপুর গোরাপাড়া গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদুল (৩০), রেলগেট পশ্চিমপাড়ার মৃত মনি মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩০), আরবপুর গোরাপাড়ার জ্বালাল উদ্দিনের ছেলে মেহেদি হাসান ওরফে মেহেদি (২৮), একই এলাকার মৃত শিপন দাসের ছেলে বাসুদেবদাস (৩২), শহরের বারান্দি মোল্লাপাড়ার কবরস্থান ঈদগাহের সামনে লাল মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (২৮), আরবপুর কলুপাড়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে রানা (৩০), কারবালা রাজ্জাক কলেজের পার্শ্বে রিমন হোসেন (২২) ও ঘোপ সেন্ট্রাল রোড কবর স্থানের সামনে সেবাহানের ছেলে রাসেল (৩২)।
পুলিশ অপহৃত কলেজ ছাত্র শামীমুজ্জামানসহ ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল ও একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করে। একই সাথে গ্রেফতার করে জাহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ওরফে মেহেদী, বাসুদেব দাস, রাসেল ও জাকির হোসেনকে। বাকি আসামিরা পালিয়ে যায়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, এম এম কলেজের মাষ্টার্সের ছাত্র ও সদর উপজেলার সিতারামপুর মোহাম্মদিয়া রহিমিয়া নুরানি মাদ্রাসার শিক্ষকতা করেন সৈয়দ শামীমুজ্জামান। সিতারামপুর গ্রামের আসমা নামের সাথে মোবাইলে তার পরিচয় হয়। বৃহস্পতিবার বিকাল আনুমানিক ৪ টার দিকে বিমান বন্দর সড়কে আসমার সাথে দেখা করে শামীমুজ্জামান ইজিবাইক যোগে হামিদপুরের ভাড়া বাড়িতে ফিরছিলেন। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তিনি বিজিবি ক্যাম্পের সামনে পৌছুলে ৪ মোটরসাইকেলে এসে তাকে বাইক থেকে নামিয়ে অপহরণ করে টাউন হল মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে অপহরণকারিরা শামীমুজ্জামাকে টাউন হলের পূর্ব পাশে পুকুর পাড়ে একটি বেঞ্চে বসিয়ে রাখে। এরপর অপহরণকারিরা শামীমুজ্জামানের কাছে মুক্তিপন হিসেবে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে এলাপাতাড়ি চরথাপ্পড় মারে ও চাকু দিয়ে ভয় দেখানো হয়। অপহরণকারিদের ভয়ে শামীমুজ্জামান তার বড় ভাই সোহানকে মোবাইলের মাধ্যমে জানালে তাকে উদ্ধার করতে বলেন। বড় ভাই সোহান অপহরণকারিদের বিকাশ নাম্বারে ৩৪ শ টাকা প্রদান করে শামীমুজ্জামানকে ছেড়ে দিতে বলে। কিন্তু শামীমুজ্জামানকে না ছেড়ে অপহরণকারিরা তার ব্যবহৃত সিমফনি মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়।
সোহান বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় শামীমুজ্জামানকে উদ্ধার ও ছয় অপহরণকারিকে আটক করে। এই সাথে অপহরণকারিদের কাছ থেকে উদ্ধার করে মোবাইল ফোন ও একটি বার্মি চাকু। এসময় আরো কয়েকজন অপহরণকারি পলিয়ে যায়।