যশোরের খেদাপাড়ায় পুলিশ কর্মকর্তার হুকুম: ‘চা বেচলেই জেল, জরিমানা’!

‘কোন দোকানদার চুলা জ্বালাবে না, এক কাপ চাও বানাবে না, যদি শুনি কোন দোকানদার এক কাপ চা বানিয়েছেন তাহলে তাকে সোজা ধরে নিয়ে যাব। এক মাসের জেল দেব। সাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও হবে।’ করোনা সংক্রমণ রোধে সচেতন করতে এসে খেদাপাড়া ক্যাম্পের এসআই খাইরুল এমনভাবে শাসিয়েছেন চা দোকানিদের।

রোববার (২২ মার্চ) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার টেংরামারী বাজারের চা দোকানিদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এসআই খাইরুলের ভয়ে সোমবার সকাল থেকে ওই বাজারের সব দোকানে চা বিক্রি বন্ধ রয়েছে। দোকানিরা দোকান খুলে চুপচাপ বসে আছেন।

সোমবার বিকেলে সরেজমিন টেংরামারী বাজারে গিয়ে সব দোকানে চা বিক্রি বন্ধ পাওয়া গেছে। যদিও এসময় খোঁজ নিয়ে পাশ্ববর্তী সোহরাব মোড়, ভাণ্ডারী মোড় এমনকি ক্যাম্পের পাশে খেদাপাড়া বাজারেও চা বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

টেংরামারী বাজারে চা দোকান রয়েছে ১৫-১৬ টি। আর চা বেচেই সংসার চলে এসব দোকানিদের।
যদিও করোনা ঠেকাতে মণিরামপুরে চা বানানো বা বিক্রি বন্ধ সম্পর্কে তেমন কোন নির্দেশনা নেই। ফলে পুলিশ কর্মকর্তার এমন সিদ্ধান্তে হতবাক খরিদ্দাররা।

বাজারের চা বিক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, রোববার (২৩ মার্চ) রাত ৮টার দিকে খেদাপাড়া ক্যাম্পের ৫-৬ জন পুলিশ আমার দোকানের সামনে আসে। এসেই বাজারের সব দোকানদারদের একসাথে ডেকে বলেছে, কোন দোকানদার চুলা জ্বালাবেনা। এক কাপ চা বিক্রি করলে দোকানদারের এক মাসের জেল ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। সেই ভয়ে সকাল থেকে চুলা বন্ধ রেখেছি।

চা বিক্রেতা আব্দুল আজিজ বলেন, আমরাতো গরিব মানুষ। চা না বেচলে খাব কি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই খাইরুল অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, প্রথমে ওই রকম বলেছিলাম। পরে দোকানদারদের বলেছি, দোকানে লোকের ভিড় রাখা চলবে না। যারা চা পান করতে আসবে তারা পান করেই চলে যাবে।

জানতে চাইলে করোনা রোধে উপজেলা পর্যায়ে গঠিত টিমের মেন্টর হীরক কুমার সরকার বলেন, চা বিক্রি বন্ধ রাখতে বলা মানেই তো লকডাউন ঘোষণা করা। মণিরামপুরে এখনো তেমন কোন ঘোষণা আসেনি। আমরা চা দোকানে কেরম খেলা ও টিভি চালানো বন্ধ রাখতে বলেছি। দোকানদারদেরকে বলা হয়েছে, যেনো দোকানে ভিড় না হয়। চা পান করেই লোকজনকে চলে যেতে হবে।