যশোরে বলরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়েগে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

যশোর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার বলরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষক জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগের ব্যবস্থা করেছেন। আর এ থেকে কয়েক লাখ টাকা অর্থ বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে তিনি এই জাল-জালিয়াতিতে সামিল হয়েছেন। শুধু তাই নয়, অর্থের বিনিময়ে এই নিয়োগ বাণিজ্য জায়েজ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। ভুক্তভোগি প্রতারিত শিক্ষকরা প্রতিকার চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে জানা যায়, বলরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ে লাইলা পারভীন ১৯৯৯ সাল থেকে এবং ২০০৪ সাল থেকে সহিদুল ইসলাম সহকারী শিক্ষক সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বিদ্যালয়টি গত বছর এমপিওভুক্ত হয়। এমপিওভুক্ত হওয়ার পর বিদ্যালয়ের সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান যোগসাজস করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই শিক্ষকদের পদে নতুন শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করে। যাদেরকে এমপিওভুক্ত করার জন্য কাগজপত্র দাখিল করেছেন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষক লাইলা পারভীনকে সহকারী গ্রন্থগারিক পদে এবং সহিদুল ইসলামকে সহকারী শিক্ষক শরিরচর্চা বিষয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরি করে জমা দিয়েছে। লাইলা পারভীনের গ্রন্থগারিক ও সহিদুল ইসলামের শারীর চর্চা বিষয়ে কোন সনদপত্র নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সভাপতি আকরাম বিশ্বাস তার বউমা (ছেলের বউ) কে বিদ্যালয়ের কেরানি পদে নিয়োগ দিতে এসব জাল-জালিয়াতি করেছেন। আর বিদ্যালয়ের কেরানি নূর ইসলামকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন। সভাপতি আকরাম বিশ্বাস ও সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান চাচা-ভাইপো হওয়ার সুবাদে এসব অনিয়ম করেছেন।

অভিযোগের ব্যপারে সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, আমি একজন শিক্ষক। আমি নিয়োগ কমিটির কিছু না। কাউকে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। নিয়োগ কমিটি ও ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ দেয়।

এ বিষয়ে জানতে সভাপতি এম এম আকরাম বিশ্বাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তেমন কিছু হয়নি। এরপর ধন্যবাদ বলে ফোন কেটে দেন।

অভিযোগের ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জমির উদ্দিনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এই নিয়োগের সময় ছিলাম না। আমি জানতে পেরেছি এক মাদ্রাসার সুপার এর সাথে জড়িত। তাকে আমি সতর্ক করে কাগজপত্র ঠিকঠাক করে দিতে বলেছি। কাগজপত্র ঠিকঠাক না হওয়া পর্যন্ত সকলের এমপিও’র কাগজপত্র আমরা পাঠাতে পারবো না।

তিনি বলেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে ত্যাগী তাদেরকেই স্ব স্ব স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে। আমি লাইলা পারভীনের কাগজপত্র দেখেছি। তার সব কিছুই ঠিকঠাক আছে। সে বাংলাই নিয়োগ পাবে।