অনুমোদন ছাড়াই চিকিৎসা দেওয়া হতো মাইন্ড এইড হাসপাতালে

রাজধানীর আদাবরে অবস্থিত মাইন্ড এইড সাইকিয়াট্রিক অ্যান্ড ডি এডিকশন হাসপাতাল অনুমোদন ছাড়াই প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসার নামে অবৈধ অর্থ অর্জন করে আসছিল কর্তৃপক্ষ।

আজ মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে এএসপি আনিসুল করিম শিপনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০ আসামির রিমান্ড আবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মাইন্ড এইড হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ড বয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ।

এর আগে নিহত আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার আদাবর থানায় ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা সবাই মাইন্ড এইড সাইকিয়াট্রিক অ্যান্ড ডি এডিকশন হাসপাতালের বাবুর্চি, ওয়ার্ড বয়, মার্কেটিং অফিসার ও কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কর্মরত।

মামলার এজাহারে বর্ণিত ১১-১৫ নম্বর ক্রমিকে বর্ণিত আসামিরা অনুমোদন ছাড়াই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসার নামে অবৈধ অর্থ অর্জন করা হচ্ছিল।

এই মামলায় ঘটনার শিকার মো. আনিসুল করিমকে উন্নত চিকিৎসার আশায় মামলার বাদী গত ৯ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন মানসিক চিকিৎসা দিতে পারেন এমন কোনো চিকিৎসক হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন না। আসামিরা চিকিৎসা দেওয়ার অজুহাতে ভিকটিমকে বলপ্রয়োগ করে হাসপাতালের দোতলায় স্থাপিত একটি অবজারভেশন কক্ষে নিয়ে যান। কক্ষে প্রবেশের সময় আসামিরা ভিকটিম মো. আনিসুল করিমকে মারতে মারতে অবজারভেশন কক্ষে ঢুকান। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভিকটিমকে ঘাড়, পিঠ ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে কক্ষের ফ্লোর ম্যাটের ওপর উপুড় করে ফেলে দেন। অতঃপর আসামিরা কয়েকজন ভিকটিমের পিঠের ওপর চড়ে বসেন, কয়েকজন মাথার ওপরে আঘাত করেন, কয়েকজন দুই হাত পিঠ মোড়া করে ওড়না দিয়ে বাঁধেন।

আসামিদের এমন অমানসিক নির্যাতনে ভিকটিম আনিসুল করিমের মৃত্যু হয়। এজাহারনামীয় ১১-১৫ নম্বর ক্রমিকে বর্ণিত আসামিরা পলাতক। তাদের বর্তমান অবস্থান নির্ণয়পূর্বক গ্রেপ্তারের স্বার্থে উল্লেখিত আসামিদেকে পুলিশ হেফাজতে এনে ব্যাপক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।