বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাজের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এর ফলে প্রত্যেকটি জেলা পরিষদকে যেমন আর্থিক বলশালি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব তেমনি, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি জেলা পর্যায়ে উজ্বল করাও সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সে লক্ষ্যেই কাজ করছে। নিজ সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে জেলা পরিষদকে শক্তিশালী আর্থিক জোনে পরিণত করা সম্ভব। যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফ্জ্জুামান পিকুল এক একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন।
যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, যশোর জেলা পরিষদের সম্পদ যথাযথ ব্যবহার করা গেলে বছরে অন্তত ১০ কোটি আয় করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। সমস্যাগুলোর সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। জেলা পরিষদের কাজে সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে; জেলা পরিষদের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ার নেই। এলজিইডির কাছ থেকে ইঞ্জিনিয়ার পেতে হয়। তারা কিছু সময়ের জন্য ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে আবার ফেরত নিয়ে নেয়। অনেক সময় দেখা যায়, কাজের মাঝপথে ইঞ্জিনিয়ার প্রত্যাহার করায় কাজে যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাকিয়ে থাকতে হয় কখন ইঞ্জিনিয়ার পাওয়া যাবে। এটি একটি যাতনাময় পরিস্থিতি। এখান থেকে বের হয়ে জেলা পরিষদকে স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হতে হবে। তিনি আশা করছেন সে বিষয়ে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে খুব শীঘ্রই।
আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার নেই। এটিও একটি বড় সমস্যা। তারপরেও সীমাবদ্ধতা এড়িয়ে যশোর জেলা পরিষদ এখন যথেষ্ট আশাপ্রদ কাজ করছে। আগামী ২৪ জানুয়ারি এখানে ১৬ লাখ টাকার বৃত্তি প্রদান করা হবে। সুবিধাভোগীরা প্রত্যেকেই ৫০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা পাবে। ইতোমধ্যে যথাযথদের সাইকেল, সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার প্রক্রিয়া রয়েছে যশোরে।
কিছু উদ্যোগে যশোর জেলা পরিষদের এখন বছরে ৬০/৭০ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। আগে যেখানে লুটপাটের সিস্টেম ছিল এখন তা কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। একইভাবে উদ্যোগ নেওয়া গেলে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা পরিষদ কার্যকর আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। সেই চেষ্টায় কাজ করছি। ০৯/০৫/২০১৭ তারিখে দায়িত্ব গ্রহণের পর যশোর জেলা পরিষদকে অনেক গোছানো হয়েছে বলে জানালেন সাইফুজ্জামান পিকুল।
যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার সন্তান সাইফুজ্জামান পিকুল ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। প্রথমে তিনি ছাত্রলীগে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এরপর যুবলীগ আর এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরব। জীবনে অনেক মামলা, হামলার শিকার হয়েছেন তবু দল ত্যাগ করেননি। এক রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগেই তিনি আস্থাশীল। দলের মুল্যায়নে তিনি সন্তষ্ট। তবে দলে একশ্রেনীর সুবিধাবাদী রয়েছে। এরা জেনে বা না জেনে দলের ক্ষতি করছেন। এদের থেকে সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ তার।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বললেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কন্যা, প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশ এখন বলিষ্ঠ অর্থনীতির ধারক। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের থেকেও আর্থিক বলশালী হবে। এটি আশার কথা। আর্থ সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথেষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। একটি জাতির এমন প্রধানমন্ত্রী পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। পিতার অসমাপ্ত কাজ করছে তার সুযোগ্য কন্যা। তিনি দীর্ঘজীবি হলে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হবে।