প্রতারনার মাধ্যমে টাকা আত্মসাত ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পটুয়াখালি জেলা সদরের এ জে আর পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের অফিস থেকে জসিম উদ্দিন (৩৩) নামে এক প্রতারককে আটক করেছে।
এঘটনায় এস এ পরিবহন যশোর আর এন রোড শাখার ম্যানেজার মাগুরা জেলা সদরের আদর্শপাড়ার সিরাজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে আব্দুল লতিফ (৫০) বাদি হয়ে ৯ ডিসেম্বর বিকেলে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।
মামলায় পিতাপুত্রসহ দুইজনকে আসামি করা হয়। আটক জসিম উদ্দিন বরিশাল বানারিপাড়া থানার বড় ভৈতস্বর গ্রামের বর্তমানে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার কুতুবপুর গ্রামের মোঃ কুদ্দুস ফকিরের ছেলে। এ ঘটনায় জসিমের পিতা মৃত সামসের আলী ফকিরের ছেলে কুদ্দুস ফকিরকেও (৬০) আসামি করা হয়।
পিবিআইয়ের এস আই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই রেজওয়ান জানান, ৯ ডিসেম্বর বিকেলে পটুয়াখালি পিবিআইয়ের সহযোগিতায় পূর্ব রুস্তÍম মৃধা কালভার্ট সংলগ্ন, পটুয়াখালী এ জে আর পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের অফিস কক্ষ থেকে জসিমকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) জসিমকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী আদালত) মোঃ মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আটক জসিম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইয়ের কাছে ৬ লাখ টাকা প্রতারনার মাধ্যমে আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয় অভিযুক্ত মোঃ জসিম উদ্দিন গত ২০১১ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসএ পরিবহন আর এন রোড, যশোর শাখায় পার্সেল সহকারী হিসাবে কর্মরত ছিল। এসএ পরিবহন যশোর শাখায় কর্মরত থাকাকালে জসিমের উপর কন্ডিশনের মালামাল ডেলিভারী দায়িত্ব ছিল।
এরপর জসিমকে ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এসএ পরিবহন যশোর আরএন রোড শাখা থেকে পদোন্নতি দিয়ে যশোর বেনাপোল শাখায় ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার হিসাবে বদলি করা হয়।
তাকে বদলী করার সময় যশোর শাখার হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন সুকৌশলে নামমাত্র হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে যশোর বেনাপোল শাখায় যোগদান করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন গ্রাহকদের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে কন্ডিশনের মালামাল ডেলিভারীর টাকার
হিসাব গরমিল পরিলক্ষিত হলে অভিযুক্তকে ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর যশোর বেনাপোল এসএ পরিবহন শাখা থেকে কর্মচ্যুত করে টাকার হিসাববুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তলব করা হয়।
অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনের উপস্থিতিতে এসএ পরিবহন আরএন রোড শাখায় হিসাব নিকাশ করাকালে জসিম উদ্দিনের কন্ডিশনের মালামাল ডেলিভারি দিয়ে অভিনব কায়দায় ৮,০১০০০/(আট লক্ষ এক হাজার) টাকা আতœসাৎ করার বিষয়টি প্রকাশিত হয়।
এরপর প্রতিষ্ঠান থেকে আত্মসাৎকৃত টাকা আদায়ের জন্য করার জসিম উদ্দিনকে পর্যায়ক্রমে চাপ সৃষ্টি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল অভিযুক্তের খালু এসএম সামি এসএ পরিবহন, মিরপুর শাখা, ঢাকায় উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তের আত্মসাৎকৃত টাকার মধ্য থেকে ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) টাকা ফেরত দেয়।
বাকি ৬০১,০০০ (ছয় লক্ষ এক হাজার) টাকা পর্যায়ক্রমে ফেরত দেওয়ার লিখিত অঙ্গিকার করে। কিন্তু পরবর্তীতে অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন এসএ পরিবহন প্রতিষ্ঠান থেকে আত্মসাৎকৃত বকেয়া ৬,০১,০০০ (ছয় লক্ষ এক হাজার) টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে।
আসামীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বিভিন্ন ধরণের হুমকি প্রদান করে। এ সব কারণে টাকা আদায় করতে না পেরে এস এ পরিবহন কর্তৃপক্ষ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করে।