জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশন স্বীকার করেছে যে, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পালিয়ে যাবার ক্ষেত্রে শরণার্থীদের মধ্যে বৈষম্য করা হয়েছে।
গতকাল (মঙ্গলবার) এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি এই বর্ণবৈষম্যের কথা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী এবং সীমান্ত কর্মকর্তারা কিছু অ-ইউরোপীয় এবং কৃষ্ণাঙ্গ লোকজনের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন। বৈষম্যের শিকার লোকজন কৃষ্ণাঙ্গ,
দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিক এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের অধিবাসী। এসব লোকজনকে ইউক্রেনের সীমান্ত পাড়ি দেয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয় এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্বেতাঙ্গ এবং ইউরোপীয়দেরকে সীমান্ত পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রথমে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে এই ঘটনা ফাঁস হলেও তা রাশিয়ার অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো এবং ইউক্রেন সরকার। কিন্তু ফিলিপো গ্রান্ডি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ইউক্রেনীয় এবং অ-ইউক্রেনীয়দের বিষয়ে আপনারা মিডিয়াতে ভিন্নভাবে তুলে ধরা কিছু খবর দেখেছেন।
এখন আমাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে এটি সরকারি নীতি নয় তবে এ ধরনের কিছু উদাহরণ তৈরি হয়েছে। আপনারা বুঝতেই পারেন সম্ভাব্য সব ঘটনা আমরা পর্যবেক্ষণ করতে পারি না।
জাতিসংঘ হাইকমিশনার বলেন, ইউক্রেনীয় এবং অ-ইউক্রেনীয়দের মধ্যে কোনো ধরনের বৈষম্য করা উচিত নয়, একইভাবে ইউরোপীয় এবং অ-ইউরোপীয় হিসেবেও বর্ণবৈষম্য তৈরি করা যাবে না।
মনে রাখতে হবে এখন সবাই একই ঝুঁকি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। গ্রান্ডি আরো বলেন, ইউক্রেন থেকে যারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পালিয়ে যাচ্ছে তাদের সবাই যাতে সমান সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে জাতিসংঘ।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে খবর এবং ছবি ছড়িয়ে পড়ে যে, আফ্রিকা ও ক্যারিবীয় বংশোদ্ভূত কৃষ্ণাঙ্গ লোকজনকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের দিকে যাওয়া বাস ও ট্রেনে উঠতে না দিয়ে সেখানে নীল চোখ ও সোনালি চুলের শ্বেতাঙ্গ এবং ইউরোপীয়দেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
প্রথমে বিষয়টিকে রাশিয়ার অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও পরবর্তীতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে তা স্বীকার করে নেয়া হলো। একইভাবে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার আরও কিছু দেশের নাগরিকরা এ ধরনের বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পার্সটুডে